
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় হাইকোর্ট বহাল রেখেছে। এ রায়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে।
শনিবার (৩ মে) ১৩১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়।
এর আগে ১৬ মার্চ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছিল।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অন্যান্য আইনজীবীরা। আসামিপক্ষের আইনজীবী এবং নিহত আবরারের পরিবার—ভাই আবরার ফাইয়াজ ও বাবা বরকত উল্লাহও উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের পর আবরারের ভাই ফাইয়াজ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘রায় বহাল রয়েছে, আমরা সন্তুষ্ট। আশা করি দ্রুত রায় কার্যকর হবে।’ তার বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘আমরা আপাতত সন্তুষ্ট। সরকারের কাছে দাবি জানাই, যেন দ্রুত রায় কার্যকর করা হয়।’
এসময় এক আসামির জেল থেকে পালানো সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা ছয় মাস পর জানলাম। এটি আমাদের নয়, জেল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন।’
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও পানি আগ্রাসন বিষয়ে ফেসবুকে মতামত প্রকাশের জেরে আবরারকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের একটি কক্ষে নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করে। ওই রাতেই তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন তার বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার চার্জশিট দেয়া হয় মাত্র ৩৭ দিনের মধ্যে। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন দেন বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান। ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স আসে এবং পরে কারাবন্দি আসামিরা জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, মো. সাদাত এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমী, মো. মিজানুর রহমান মিজান, এস এম মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মোর্শেদ (অমর্ত্য ইসলাম), এহতেশামুল রাব্বি (তানিম), মোহাম্মদ মোর্শেদ উজ্জামান মণ্ডল (জিসান) ও মুজতবা রাফিদ।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, মো. আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ ও মো. মোয়াজ (আবু হোরায়রা)।
এ রায়ের মাধ্যমে দেশের শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক সহিংসতার এক নৃশংস ঘটনার বিচারিক প্রক্রিয়া এক ধাপ এগোল।
ইউ