
ছবি সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইসরায়েলকে ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাত অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে চীন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশটি এই যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
১৩ জুন (শুক্রবার) ভোরে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ইরানের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরক বিমান হামলার পরপরই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠক আহ্বান করে। সেখানে চীনের জাতিসংঘ প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, “ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। চীন এই আগ্রাসনের কঠোর বিরোধিতা করছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলকে আহ্বান জানাই, এই সংঘাত অবিলম্বে বন্ধ করুন এবং যেকোনো প্রকার সামরিক উত্তেজনা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এই যুদ্ধ শুধু ইসরায়েল-ইরান নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর ভয়াবহ পরিণতি সবাইকে ভোগ করতে হবে।’
গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী তেহরানসহ অন্তত আটটি ইরানি শহরে বড় ধরনের বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত ৭৮ জন নিহত এবং প্রায় ৩০০ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি ও কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা রয়েছেন।
এই হামলার জবাবে ইরান রাতেই শুরু করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’, যার আওতায় ইসরায়েলের কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় পাল্টা আঘাত হানা হয়। এতে এখন পর্যন্ত ২ জন নিহত এবং ৬৩ জন আহত হয়েছেন।
হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই এক ভিডিওবার্তায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘যতদিন ইরান পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি দিয়ে যাবে, ততদিন আমাদের ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ সামরিক অভিযান চলবে।’
অন্যদিকে শনিবার (১৪ জুন) সকালে এক বিবৃতিতে ইরানের সামরিক বাহিনী জানায়, ‘আমাদের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ অভিযানও অনির্দিষ্টকালের জন্য চলমান থাকবে।’
উল্লেখ্য, ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গত মে মাসে ওমানে আলোচনা শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ৬ দফা সংলাপ হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি একটি প্রস্তাব দিলেও তেহরান তা প্রত্যাখ্যান করে। এই প্রত্যাখ্যানের কিছুদিন পরই ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযান শুরু হয়।
চীনের মতামতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও এই সংঘাত বন্ধে চাপ বাড়ছে। তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
ইউ