
ছবি: উইমেনআই২৪ ডটকম
ঢাকার স্বাস্থ্য ভবনে বুধবার (২৮ মে) অনুষ্ঠিত হলো নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ও প্রসবজনিত ফিস্টুলা নিরসনের আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের এক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনা। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাতৃস্বাস্থ্য কর্মসূচি, সহযোগিতায় ছিল পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর (ডিজিএফপি), নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর (ডিজিএনএম), বাংলাদেশ স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা সমিতি (ওজিএসবি), এবং কারিগরি সহায়তা দেয় জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল, “তার স্বাস্থ্য, তার অধিকার: একটি ফিস্টুলা ও প্রসবজনিত আঘাতবিহীন ভবিষ্যতের আকৃতি”। আলোচনায় মাতৃস্বাস্থ্য, সমতা, মর্যাদা ও অধিকারকে গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং মাতৃমৃত্যু হ্রাস ও ফিস্টুলা নির্মূলের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিএএইচ লাইনের পরিচালক ডা. এস. এম. আব্দুল্লাহ-আল-মুরাদ উদ্বোধনী বক্তব্যে নিরাপদ মাতৃত্ব ও ফিস্টুলা নিরসনের সমন্বিত কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরেন। এরপর অনুষ্ঠিত হয় দুটি কারিগরি উপস্থাপনা।
OGSB সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান মাতৃস্বাস্থ্যের জাতীয় অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করেন এবং স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে গুণগত ও সম্মানজনক সেবার ওপর জোর দেন। ইউএনএফপিএ-এর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ডা. অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ফিস্টুলা নির্মূলের লক্ষ্যে জেলা-ভিত্তিক মডেল তৈরি করা হয়েছে, যাতে সময়মতো শনাক্তকরণ, রেফারাল এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করা যায়।
আলোচনায় ডিজিএইচএস, ডিজিএফপি, ডিজিএনএম ও ওজিএসবি-এর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন এবং তারা নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। ইউএনএফপিএ-এর প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বিভবেন্দ্র সিং রঘুবংশী ইউনিয়ন পর্যায়ে ২৪ ঘণ্টা প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা চালু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে সেবায় সমতা ও প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক শেখ সাইদুল হক বলেন, প্যানেল আলোচনায় আসা সুপারিশগুলো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. রিজওয়ানুর রহমান জানান, আলোচনার ফলাফল সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহে পৌঁছে দেওয়া হবে।
আলোচনার পুরো আয়োজনটি পরিচালনা করেন ইউএনএফপিএ-এর এসআরএইচআর বিশেষজ্ঞ ডা. আবু সায়েদ মো. হাসান। তিনি আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সক্রিয় পরিবেশ নিশ্চিত করেন।
আলোচনার শেষে একটি বার্তা পুনর্ব্যক্ত করা হয়—মাতৃস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ জাতীয় অগ্রাধিকার দিতে হবে, এবং যেন আর কোনো নারী প্রতিরোধযোগ্য প্রসবজনিত আঘাতে কষ্ট না পান। বলা হয়, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং প্রমাণ করছে যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সমন্বিত অংশীদারিত্ব এবং মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি এক লাখ জীবিত জন্মে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০-এ নামিয়ে আনা এবং ফিস্টুলা নির্মূল করা কেবল লক্ষ্য নয়, বরং একটি অর্জনযোগ্য বাস্তবতা।
ইউ