
ফুজিরার বন্যা দুর্গত এলাকায় বাংলাদেশিদের খাদ্যসংকট
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বন্যা দুর্গত এলাকায় কয়েক হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি খাদ্যসংকটে দিন কাটাচ্ছে। ফুজিরার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৬০০০ প্রবাসী শ্রমিক খাদ্যের জন্য হাহাকার করছে। বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ওই অঞ্চলে খাদ্য সরবরাহ করার উদ্যোগ নিলেও পর্যাপ্ত খাদ্য না থাকায় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি।
গত (২৭ জুলাই) অতিবৃষ্টির কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজিরা, রাস আল খাইমা অঞ্চলে পাহাড়ি ঢল এবং বন্যা দেখা দিলে হাজার হাজার মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়েন। এই বন্যায় এক বাংলাদেশিসহ সাত জন এশিয়ান নাগরিক মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে।
বর্তমানে বন্যার পানি নেমে গেলেও কিছু কিছু অঞ্চলে এখনো জলাবদ্ধতা রয়ে গেছে। সব চেয়ে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে প্রবাসী শ্রমিকরা। বন্যার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে প্রবাসী শ্রমিকদের মাঝে। ফুজিরা অঞ্চলে প্রায় ৬ হাজার লোকের খাদ্য সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। শনিবার (৩০ জুলাই) সেখানে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে ২ শত প্যাকেটের কিছু খাদ্য সামগ্রী নিয়ে গেলে ক্ষুধার্ত মানুষগুলো খাদ্য নিয়ে টানা-হেচড়া শুরু করতে দেখা যায়। চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য সেখানকার বাংলাদেশ কমিউনিটি বিত্তবান প্রবাসী বাংলাদেশি এবং সরকারের নিকট জরুরি আহ্বান জানিয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, যে দিকে তাকাই সেদিকে যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরবাড়ি দোকানপাট ভেসে যাওয়ায় মানুষ মসজিদে অথবা কিছু কিছু বড় দালানের নিচে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে আশ্রয় নিয়েছে। খাদ্য পানি ও বিদ্যুৎ সংকটে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে তাদের অস্থির দিন কাটছে।
এদিকে বন্যার তোড়ে ভেসে যাওয়া প্রবাসী বাংলাদেশী সাজ্জাদ হোসেনের লাশ দেশে পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে । সাজ্জাদ হোসেনের লাশটি দেশে পাঠানোর জন্য তার পরিবারও বাংলাদেশ মিশনে আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সমিতির ফুজিরা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হক বলেন, ‘হঠাৎ এই বন্যার কারণে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে। অনেকে তাদের পাসপোর্ট আইডি কার্ড হারিয়েছে। দীর্ঘ দিন করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা সংকটের মধ্য দিয়ে দিন কাটিয়েছে। করোনার ধকল কাটিয়ে না উঠতেই আবার বন্যার কবলে পড়ায় প্রবাসীরা কঠিন সময় পার করছে। খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।’ দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে বন্যার পানি নেমে গিয়েছে। কিছু কিছু অঞ্চলে এখনো জলাবদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশিদের সাথে কথা বলেছি। দুবাই কনস্যুলেট থেকে ওই অঞ্চলে কিছু সংখ্যক প্রবাসীদের
খাদ্য সরবরাহ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘খাদ্য সংকট রয়েছে। অসহায় প্রবাসীদের খাদ্য সংকট পূরণের জন্য সরকারের উচ্চ মহলে জানানো হবে।’
ইউ