
সংগৃহীত ছবি
খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির এক কিশোরী শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) গভীর ক্ষোভ, উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই বর্বর ও ঘৃণ্য অপরাধে জড়িতদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও, অপরাধীদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, দেশে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে। সামাজিক লজ্জা ও ভয়ের কারণে ভুক্তভোগী প্রথমে মুখ না খুললেও, আত্মহত্যার চেষ্টার মাধ্যমে তার মানসিক বিপর্যয়ের গভীরতা সামনে আসে। ১২ জুলাই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে পরিবারের জিজ্ঞাসাবাদে নির্যাতনের নির্মম সত্য উদঘাটিত হয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই দেশে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১,৫৫৫ জন নারী ও কন্যাশিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৩৫৪ জন, যার সিংহভাগই শিশু ও কিশোরী। কেবল জুন মাসেই ধর্ষণের শিকার ৬৫ জন, যার মধ্যে ৪৩ জনই শিশু। এমনকি ধর্ষণের পর প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন, যাদের দুজনই শিশু।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন মনে করে, নারী ও শিশুর প্রতি এমন বর্বরতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমজেএফ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, এই ঘটনায় যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। একইসাথে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মানসিক ও শারীরিক পুনর্বাসনের জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে।
নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে আর কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। এখনই সময় কার্যকর আইন প্রয়োগ, জনগণকে সচেতন করা এবং পারিবারিক-সামাজিক মূল্যবোধের ভাঙন রোধে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার। না হলে, আরও বহু শিশুর শৈশব পুড়ে ছাই হবে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে—এই অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পারে ভবিষ্যতের ধর্ষকদের রুখে দিতে এবং সমাজে ন্যায়বিচার ও নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে। এখনই সময়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার।
//এল//