ঢাবিতে চালু হলো গবেষণায় ‘চুরি’ ধরার সফটওয়্যার
বাংলা ভাষায় লিখিত গবেষণাপত্র, অ্যাসাইনমেন্ট, টার্ম পেপারসহ বিভিন্ন আর্টিকেলে সিমিলারিটি চেকিং (চৌর্যবৃত্তি) নিরূপণের জন্য ডিইউবিডি ২১ (dubd 21) নামে একটি সফটওয়্যার অবমুক্ত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
মঙ্গলবার সকালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে একটি টিম এই সফটওয়্যার তৈরি করেছে।
উদ্ভাবনের সঙ্গে যুক্ত টিমের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আট মাসে এই সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সফটওয়্যারটি বাংলা ভাষায় লিখিত আর্টিকেল, কন্টেন্ট, অ্যাসাইনমেন্ট, রিসার্চ পেপারে কতটুকু মৌলিকত্ব সেটা যাচাই করতে সক্ষম। এছাড়া কোন কোন উৎস থেকে তথ্য নেওয়া বা কপি করা হয়েছে, কত শতাংশ কপি করা হয়েছে সেটা দেখা যাবে। পাশাপাশি কোথা থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে সেটির লিংকও দিয়ে দেবে এই সফটওয়্যার।
যাচাই প্রক্রিয়ার সম্পর্কে উদ্ভাবকেরা বলেন, এই সফটওয়্যার প্রথমে বাংলা ভাষায় লিখিত বিভিন্ন রিসার্চ আর্টিকেল, অ্যাসাইনমেন্ট প্রাইমারি সোর্স হিসেবে নেবে। সেক্ষেত্রে উইকিপিডিয়াসহ বিভিন্ন গবেষণা জার্নালকে ব্যবহার করবে। এরপর নতুন কোনো গবেষণার সিমিলারিটি ইনডেক্স নির্ণয়ের জন্য ইনপুট করা হলে সফটওয়্যার সেটি নির্ণয় করবে।
এ বিষয়ে আবদুস সাত্তার বলেন, ‘এই সফটওয়ারের আরো উন্নয়ন হবে। প্রাইমারি সোর্স ইনক্লুড করাসহ এতে বিভিন্ন বিষয় সংযোজন করা হবে। এরপর নীতিমালার আলোকে আমরা এটিকে কমার্শিয়ালি চালু করব।’
সফটওয়্যারটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সফটওয়ারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে যেমন ভূমিকা রাখবে ঠিক তেমনি গবেষণায় এটি ব্যবহৃত হবে। কেউ গবেষণা করতে চাইলে তার গবেষণায় কোনো সিমিলারিটি আছে কি না যাচাই করতে পারবে এটির মাধ্যমে। এর ফলে গবেষণাটি হবে একেবারে মৌলিক। আর এই মৌলিকত্বই হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান। আর যখন এটা আমরা পরিপূর্ণভাবে করতে পারব তখনই সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশিত সামগ্রিক মানের ওপরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
উপাচার্য আরো বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা ও উদ্ভাবনের দিকে রূপান্তর করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পূর্বাচলে রাজউক আমাদের যে জায়গাটি দিয়েছে সেখানে আমরা আমাদের সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন ক্যাম্পাস তৈরি করব। সেটিকে আমরা এক্সক্লুসিভ ইনোভেশন ক্যাম্পাসে রূপান্তর করব। এ ছাড়া কক্সবাজারে ব্লু ইকোনোমির জন্য সেখানেও গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় সফটওয়্যারটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউ