ফাইল ছবি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মদিনা বাজারে ছাত্রীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাং কর্তৃক মাদরাসার শিক্ষক ও অফিস সহকারীর ওপর হামলা এবং কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মহিলা পরিষদ। একইসঙ্গে দুই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার (৮ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো নারীবাদি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
৮ মে’র বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরের বলা হয়, নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মদিনা বাজারে ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাং কর্তৃক মাদ্রাসার শিক্ষক ও অফিস সহকারীর ওপর হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং সদস্য রাজু ও আবু নোমান মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে শ্রেণীকক্ষে ঢুকে উত্ত্যক্ত করছিল। নুরানি বিভাগের শিক্ষক মো. সোহেল বিষয়টি দেখে তাঁদের অধ্যক্ষের কাছে সোপর্দ করতে চাইলে বখাটে কিশোর গ্যাংরা তার ওপর হামলা চালায়। ঘটনার দিন বিকেলে অফিস সহকারী সোহেল বাড়ি থেকে বের হয়ে মুছাপুর বাংলাবাজারে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং সদস্য রাজু ও আবু নোমানসহ আরো কিছু বখাটে তার ওপর হামলা চালায় এবং কাঠ ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তার দুই হাত ভেঙ্গে দেয়। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দুই দফায় হাসানের ওপর হামলা চালায় এবং শিক্ষক মো. সোহেলও এই হামলার শিকার হন।
অন্যদিকে, কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, অভিযুক্ত মনিরের বাবা এবং নির্যাতনের শিকার ষ্কুলছাত্রীর বাবা মামাতো-ফুফাতো ভাই। আত্মীয়তার সূত্রে মনির ওই স্কুলছাত্রীর বাসায় আসা যাওয়া করত। সম্প্রতি ওই স্কুলছাত্রীকে মনির বিয়ের প্রস্তাব দিলে স্কুলছাত্রী তা নাকচ করে দেয়। এর জের ধরে গত ৭ মে ভোরে ঘুমন্ত অবস্থায় মনির তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে মনির সেখান থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রীকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করে।
সংগঠনটি উদ্বেগ করে বিবৃতিতে বলা হয়, রাস্তাঘাটে, স্কুল-কলেজ, পাড়া-মহল্লায় এলাকার কিশোর গ্যাং বা বখাটেদের দ্বারা নারী ও কন্যাশিশুরা উত্ত্যক্তকরণের শিকার হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় প্রতিবাদকারীরা বিভিন্নভাবে সহিংসতা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। এলাকাভিত্তিক কিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব দিন দিন বাড়ছে সেই সাথে সহিংসতার মাত্রাও বেড়েই চলেছে। সেই সাথে পারিবারিক পরিমন্ডলেও নারী ও কন্যারা প্রতিনিয়ত নানা ধরণের সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এ ধরণের সহিংসতার ঘটনা নারী ও কন্যাদের চলমান অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে এবং তাদের স্বাভাবিক জীবন নিরাপত্তার হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিবৃতিতে এই দুই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
ইউ