১০ মাসে নির্যাতনের শিকার ৩০৬৭ নারী
"সবার মাঝে ঐক্য গড়ি, নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করি" স্লোগানকে সাথে নিয়ে কর্ম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের প্রতি যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে জেন্ডার প্লাটফর্ম বাংলাদেশ।
রবিবার ২৭ নভেম্বর রাজধানী জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বেলা ১১ টায় জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিস বিলস এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমিন বলেন, কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল ধরনের সহিংসতা ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মানবাধিকার অথবা শ্রমিক সংগঠনগুলোর জোট জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ গঠিত করা হয়েছে।
নারীর প্রতি যৌন হয়রানি প্রতিরোধে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম এর কার্যক্রম গুলো হলো
১. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন প্রণয়নের জন্য পলিসি অ্যাডভোকেসি ।
২. ২০০৯ সালের হাইকোর্টের নির্দেশনা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ।
৩. হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কারখানা প্রতিষ্ঠানসমূহে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন ও কার্যকরীকরণে উদ্যোগ গ্রহণ।
৪. তথ্য, গবেষণা, ডকুমেন্টেশন ও প্রকাশনার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি।
৫. বিভিন্ন শ্রম ও ঘন এলাকায় আঞ্চলন কমিটির সাথে প্রশিক্ষণ ও সভা ৬. আইএলও কর্তৃক প্রণীত কনভেনশন 190 অনুসমর্থন করার বিষয়ে অ্যাডভোকেসি।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ বিলস এর সংবাদপত্র ভিত্তিক জরিপ অনুযায়ী ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০৭ জন নারী শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হন। এর মধ্যে কর্মস্থলে ৩৯ জন এবং কর্মস্থলের বাহিরে ৬৮ জন নারী শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নারীর প্রতি হয়রানি ও নির্যাতন রোধে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সরকারের কাছে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবি উল্লেখ করেন।
১. যৌন হয়রানি মুক্ত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত।
করার লক্ষ্যে "কর্মক্ষেত্রের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন" প্রণয়ন করতে হবে।
২. কর্মক্ষেত্র সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে।
৩. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ২০০৯ সালে প্রদানকৃত হাইকোর্টের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৪. আদালতের নির্দেশনা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় সেজন্য সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন করতে হবে।
৫. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করতে হবে।
৬. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা 2015 এর সংশোধনীতে (১ এ সেপ্টেম্বর ২০২২ প্রকাশিত গেজেট) মহিলাদের প্রতি আচরণ, সংক্রান্ত নতুন বিধি ৩৬১ কি এবং সেই বিধির (২) এ বর্ণিত অভিযোগ কমিটির গঠন, মহামান্য হাইকোর্টের প্রদানকৃত গাইড লাইন এর ভিত্তিতে করতে হবে।
৭. নারীর প্রতি সহিংসতা মুক্ত সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন মুকুট, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি এডভোকেট সীমা জহুর, ফেয়ার ওয়্যাব ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার মোঃ বাবলুর রহমান, ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলরের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাজু, কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সানজিদা সুলতানা, মনডিয়াল এফএনভির কনসালটেন্ট মোঃ শাহিনুর রহমান সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দ সহ প্রমুখ ।
-শাওন জামান
//জ//