ফাইল ছবি
সেনা অভিযানের মুখে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালে মায়ানমার থেকে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন। তারও আগে পর্যায়ক্রমে এসেছিল চার লাখ রোহিঙ্গা। এরমাঝে জন্ম নিয়েছে দেড়লাখ রোহিঙ্গা। এই সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ অস্বস্তিতে রয়েছে। কেননা এরমধ্যে কিছু রোহিঙ্গা চুরি-ডাকাতি, তোলাবাজি, খুনো-খুনি, স্বজাতীয় তরুণী-যুবতীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার পাশাপাশি বিদেশে পাচারকাজে লিপ্ত। এজন্য কক্সবাজার জেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে কতজন ভোটাধিকার পেয়েছেন? হাইকোর্ট সেই তথ্য জানতে চাওয়ার মাঝেই বড়সড় অভিযোগ উঠে এলো যে, ১৫৩ রোহিঙ্গার ভুয়া জন্ম নিবন্ধন তৈরির প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নকুলচন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। কক্সবাজার জেলার ইদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা অর্থের বিনিময়ে অসংখ্য রোহিঙ্গাকে ভোটার কার্ড দিয়ে দেশের নাগরিকত্ব দেয়ার অভিযোগ ওঠার পরেই হাইকোর্ট আগামী ৬ জুনের মধ্যে কক্সবাজারের জেলা শাসকসহ তিন বিবাদীকে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির রয়েছে। যেখানে মায়ানমারের লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার এই নির্দেশ দেয়। ওইসব রোহিঙ্গাদের জাল ঠিকানা, ভুয়ো পিতা-মাতা সাজিয়ে জাল কাগজপত্র তৈরি করা হয়েছিল। রোহিঙ্গাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। স্থানীয় একজন বাসিন্দা ৩৮ জন রোহিঙ্গার নাম উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়। শেষে ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর এক রিপোর্টে ৩৮ জনের মধ্যে ৩৫ জন রোহিঙ্গার বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। কিন্তু তার পরও রোহিঙ্গাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। রোহিঙ্গাদের ভোটার রেখেই ওই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। গত ১৮ সেপ্টেম্বর শরিয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে রোহিঙ্গা আসিয়া বিবি (২৭) পাসপোর্ট করতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হন। তার আইডি কার্ড না থাকায় জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট করতে যান তিনি। আসিয়া কক্সবাজারের টেকনাফ থানার আলী যোহার ও আম্বিয়া খাতুন দম্পতির মেয়ে। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেখতে পান ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫৩টি ভুয়া নিবন্ধন হয়েছে। তাদের সবাইকে রোহিঙ্গা হিসেবে সন্দেহ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৫৩ রোহিঙ্গা জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কয়েক লাখ টাকার লেনদেনে হয়েছে। এতে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাস ও ডিজিটাল সেন্টারের আধিকারীক নয়ন গোপ্তাসহ কতিপয় আত্মগোপনে থাকা ব্যক্তিরা জড়িত আছেন।
ইউ