ঢাকা, বাংলাদেশ

শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

English

মতামত

৪ নভেম্বর ১৯৭৬

সোহেল সানি

প্রকাশিত: ১২:৫৭, ৪ নভেম্বর ২০২২

৪ নভেম্বর ১৯৭৬

সাংবাদিক সোহেল সানি

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরও "বঙ্গবন্ধুভীতি" দূরীভূত হচ্ছিল না,  ক্ষমতাভোগীরা সন্ত্রস্তই ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের আইনানুগ বৈধতাদান ও রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্রে নিষিদ্ধ করেও বঙ্গবন্ধুভীতি দূর হচ্ছিল না। যে কারণে সুকৌশলে ক্ষমতাভোগীরা রাজনৈতিকভাবেও বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করা হয়।

অর্থাৎ ১৯৭৬ সালের ২৮ জুলাই   রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক বিচারপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েম কর্তৃক ঘোষিত"দলবিধি আইন ১৯৭৬" একটি ধারা (১০ নং) সংযোজন করেন, যাতে বলা হয়েছিল যে, কোন রাজনৈতিক দল বা প্রতিষ্ঠান কোন ব্যক্তি বিশেষের মহত্ত্ব প্রচার (ব্যক্তিপূজা) করতে পারবে না। আওয়ামী লীগেও বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করার ফন্দী এঁটেই এই কুটকৌশল অবলম্বন করা হয়। যার নেপথ্যে কুশীলবের ভূমিকায় ছিলেন  ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাককর্তৃক নিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান। হত্যার পর বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার দুই-তৃতীয়াংশকে পাওয়ার পরও যেমন খন্দকার  মোশতাক ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থান থেকে জাতীয় নেতাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করে চেয়েছিলেন, ঠিক একই আশঙ্কা থেকেই সায়েম সরকারও দলবিধি আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের রাশ টেনে ধরার হীন মানসিকতার লিপ্ত ছিলেন।  

আওয়ামী লীগের আবেদনটি সরকার ফিরিয়ে দেয় দলবিধি আইনের পরিপন্থী বলে।  আওয়ামী লীগের মেনিফেস্টো-তে বঙ্গবন্ধু ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী ও শামসুল হকের নাম ও কীর্তি উল্লেখ ছিল। এমনকি যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও সরকারের বর্ণনায় শেরেবাংলার কথাও উল্লেখ ছিল। কিন্তু এঁদের নিয়ে নয় বরং ক্ষমতাভোগীদের  গাত্রদাহ বঙ্গবন্ধু নিয়ে। অথচ অন্যসব স্থানের ন্যায় নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলা হয় বঙ্গভবন থেকে।  বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে  টাঙিয়ে দেয়া হয়েছিল শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দী ও ভাসানীর প্রতিকৃতি। 

যাহোক ১৯৭৬ সালের ৪ নভেম্বর  রাজনৈতিক দলবিধি আইনের অধীনে আওয়ামী লীগকে সরকারী লাইসেন্সলাভ করে। এ জন্য আওয়ামী লীগকে নতুনভাবে মেনিফেস্টো ছাপাতে হয়   বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিয়ে। কৌশলগত কারণেই সেদিন  আওয়ামী লীগকে এই পথ অবলম্বন করতে হয়েছিল। 

দলবিধি আইন ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতি সায়েম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, "জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরই তাঁর প্রধান লক্ষ্য। "

২২ মার্চ নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের খসড়াও তৈরি করা হয়েছিল। ঠিক এই সময় ১৯৭৬ সালের ১৩ নভেম্বর মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেন, 'শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ নির্বাচন চায় না। সপ্তাহের মুখে ১৭ নভেম্বর ভাসানী ইন্তেকাল করলে ভাসানীর স্বপ্নপূরণেরও অঙ্গীকার করেন জেনারেল জিয়া।

রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েম বঙ্গভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে একটা বৈঠকও করেছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান জিয়াও  অংশ নেন। বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরীর ভাষ্যমতে, জেনারেল জিয়া ওই বেঠকে বলেন," Who is a better Awami League than me? I have transmitted the directives of Bangabandhu from Chittagong Radio Station." জিয়ার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের ভেতরেও সেদিন মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কিন্তু অচিরেই জিয়ার আসল রূপ ফুটে ওঠে।

জাতীয় চার নেতা হত্যা হলে  মোশতাকের ৮১ দিনের রাজত্বের অবসান ঘটে। জেনারেল খালেদ মোশাররফের সামরিক অভ্যুত্থানে। জেনারেল খালেদ মোশাররফের পছন্দেই ১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক  হন সায়েম। উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান, নৌবাহিনী প্রধান মোশাররফ হোসেন খান ও বিমানবাহিনী প্রধান এমজি তোয়াব।

জাতীয় সংসদের স্পীকার আব্দুল মালেক উকিলের সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ থাকলেও  সে প্রস্তাব আমলে নেননি খালেদ- শাফায়াত বাহিনী।

অপরদিকে আওয়ামী লীগ নামেই মোশতাক আত্মপ্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। মোশতাক ২৪ আগস্ট জিয়াকে সেনাপ্রধান করেন। কিন্তু জিয়াকে বন্দী করেন জেনারেল খালেদ। মোশতাক খালেদকে সেনাপ্রধান করতে বাধ্য হন। এ অবস্থায় মোশতাক পাল্টা নেতৃত্বের আশঙ্কায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেন। ফলে ঘটে মোশতাকের পতন। খালেদের পছন্দেই বিচারপতি সায়েম রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন। ৭ নভেম্বর কর্নেল তাহেরের পাল্টা অভ্যুত্থানে জেনারেল খালেদ নিহত হন। জেনারেল জিয়া স্বপদে বহাল হন। রাষ্ট্রপতি সায়েম ৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদ বাতিল করেন এবং ১৯৭৬ সালের ২৮ জুলাই রাজনৈতিক দলবিধি আইন জারি করেন। ফলশ্রুতিতে ২৫ আগস্ট এক বৈঠকে নেতারা  সিদ্ধান্ত নেন আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবনের। 

প্রসঙ্গত রাষ্ট্রপতি মোশতাক ১৯৭৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাকশাল আদেশ বাতিল করায় সাংবিধানিকভাবেই তার বিলুপ্তি ঘটে। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সাংবিধানিক বিপ্লব সংঘটিত করে      ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ- বাকশাল গঠন করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিলে নির্বাচিত কমিটির সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান নিহত হন অপর জাতীয় তিন নেতার সঙ্গে। ফলে সিনিয়র সহ সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে গণ্য হন। সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক  আব্দুর রাজ্জাকসহ সম্পাদক মণ্ডলীর অধিকাংশ সদস্য কারাবন্দী থাকায় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন দলের মহিলা সম্পাদিকা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।

সায়েমের সামরিক সরকারের আইন মন্ত্রণালয় বরাবরে দল হিসাবে লাইসেন্স পেতে আবেদন করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় আবেদনপত্রটি দলবিধির ১০ নম্বর ধারা পরিপন্থী বলে নাকচ করে দেয়। আগেই বলেছি যে ওই ধারায় বলা হয় যে,"ব্যক্তিপূজা" করা যাবে না, অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর নাম দলীয় মেনিফেস্টোতে  থাকতে পারবে না। 

খন্দকার মোশতাক বাকশাল বাতিল করলেও জাতীয় সংসদ টিকিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৭৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী  নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। মোশতাকের আদেশে স্পিকার আবদুল মালেক উকিলের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্যদের বৈঠকও হয়েছিল  বঙ্গভবনে। উপস্থিত ৩/৪জন সংসদ সদস্য ছাড়া মোশতাকের কেউ বিরোধিতা করেননি।

এএইচএম কামরুজ্জামানের সঙ্গে  ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখানায় হত্যা করা হয়েছিল সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ ও এম মনসুর আলীকে। 

সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সামাদ আজাদ, এম কোরবান আলী, শেখ আব্দুল আজিজ, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ নেতা কারাবন্দী। আওয়ামী লীগের নভেম্বরে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইলে জনসভা করে। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদা চৌধুরীই সর্বপ্রথম  প্রকাশ্য জনসভায় বঙ্গবন্ধু ও জেল হত্যার বিচার দাবি করেন।

ফলে সাজেদা চৌধুরী, সালাউদ্দিন ইউসুফ ও মোজাফফর হোসেন পল্টু জনসভা করে ঢাকায় ফিরতেই  গ্রেফতার হয়ে যান। দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ চলে যান আত্মগোপনে। নয়া আহবায়ক হন ফণিভূষণ মজুমদারম। তিনিও দায়িত্ব ছেড়ে দেন রোষানল থেকে রক্ষার জন্য।  মিজানুর রহমান চৌধুরী ও মোল্লা জালাল উদ্দিন আহমদ যুগ্ম আহবায়ক হয়ে ১৯৭৭ সালের ৩ এপ্রিল কাউন্সিল অনুষ্ঠান করেন। কাউন্সিলে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনকে আহবায়ক করা হয়। এরপর ১৯৭৮ সালের  ৩ এপ্রিলের কাউন্সিলে আবদুল মালেক উকিলকে সভাপতি ও কারাবন্দী আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও সালাউদ্দিন ইউসুফকে যুগ্ম সম্পাদক  তোফায়েল আহমেদকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ চেয়ারম্যান আমির হোসেন আমুকে যুব সম্পাদক করা হয়। তারপরও কাটেনা দলের সংকট। মালেক- রাজ্জাকের উপদলীয় কোন্দলের শিকার হয় আওয়ামী লীগ। যুবলীগ চেয়ারম্যান আমির হোসেন আমু সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে স্বদেশে ফেরানোর দাবি জানান এবং যুবলীগ সারাদেশে লিফলেট বিতরণ করে। ছাত্রলীগ সভাপতি ওবায়দুল কাদের একই দাবী জানান। এরপর ১৯৮১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিল ডাকা হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাতে আসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের চার দশকের দুদশক আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়!!

প্রসঙ্গত, বিএনপি দাবি করে আসছে যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান। কিন্তু এ দাবিটি একেবারেই অসত্য। কেননা রাজনৈতিক দলবিধি জারি করা হয় ১৯৭৬ সালের ২৮ জুলাই। আর আওয়ামী লীগ সরকারি স্বীকৃতিলাভ করে ১৯৭৬ সালের চার নভেম্বর। 

যখন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক বিচারপতি এএসএম সায়েম। 
সেনাপ্রধান পদে বহাল থেকেই জেনারেল জিয়া প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন ১৯৭৬ সালের ৩০ নভেম্বর আর রাষ্ট্রপতি হন ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল।

রাষ্ট্রপতি সায়েমের 'রাজনৈতিক দলবিধি আইন' জারির নেপথ্যেও ছিল নির্বাচন। সেনাপ্রধান জিয়াই  তা হতে দেননি। 
রাষ্ট্রপতি সায়েম নিজের আত্মজীবনীতে লিখেছেন,"আমি সরকারের ওপর দ্রুত নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিলাম। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল আমার বিশেষ সহকারী বিচারপতি সাত্তারের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন সদস্য বললো, জিয়ার অধীনে তারা কাজ করতে চান...আমি অপরাহ্ন ২ টা ৭ মিনিটে পদত্যাগ করলাম। বড় দুঃখ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারলাম না। শুধু এই সান্ত্বনাটুকু নিয়ে চলে যাচ্ছি যে, বিশাল ক্যারিশমাটিক ব্যক্তিত্ব শেখ মুজিবুর রহমান, যাঁর নামে শুরু হয়ছিল স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং যাঁর নামে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা প্রাপ্তির মাধ্যমে তা শেষ হয়, তাঁর হত্যা ও জেল হত্যায় যে ভয়াবহ বিপজ্জনক পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি বলে আমার ধারণা। "

লেখকঃ সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও ইতিহাস গবেষক।

//জ//

২০২৩ সালে দেশে ধর্ষণের শিকার দুই শতাধিক শিশু

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফর স্থগিত

বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া সেরেলাক নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য

যে ৪ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে

পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি

তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্কুল বন্ধ ঘোষণা

বেকারদের জন্য সুখবর

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের ভোট করতে মানা 

ধ্রুব এষ আইসিইউতে

‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে’

থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

আবারো ইনফিনিক্স ও জেবিএল’র পার্টনারশিপ

সরিষাবাড়ীতে নামে মাত্র প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী মেলা

নারীর অধিকার আদায়ে ইসলামী ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করা হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী