ছবি: জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব উনাইসি লুতু ভুনিওয়াকা--------- ----ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে প্রায়ই ঘটছে নানা খুনের ঘটনা। মাদক ও অস্ত্রসহ অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান, অপহরণ ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে জড়াচ্ছে ক্যাম্পে থাকা একাধিক গ্রুপ। ক্যাম্পের ভেতর এক ভয়াবহ পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত এ বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সফরে আসছেন জাতিসংঘের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের (ইউএনডিএসএস) সহকারী মহাসচিব উনাইসি লুতু ভুনিওয়াকা।
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর ৫ দিনের সফরে বাংলাদেশ আসছেন উনাইসি লুতু ভুনিওয়াকা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি দেখার পাশাপাশি ক্যাম্পে কাজ করা জাতিসংঘ কর্মী এবং মানবিক সহায়তাকারী কর্মীদের নিরাপত্তার পরিস্থিতিটি পর্যবেক্ষণ করবেন তিনি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শুরুর দিকে সেখানে রাত ৭–৮টা পর্যন্ত মানবিক সহায়তাকারী কর্মীরা কাজ করতে পারতেন। এরপর সেটি নামতে নামতে বিকেল ৬টা, ৪টা আর এখন দুপুর ৩টার মধ্যে কর্মীদের ক্যাম্প ত্যাগ করার নির্দেশনা রয়েছে। কোনো কারণে কোথাও আটকে গেলে বা কেউ দুপুর ৩টার মধ্যে ক্যাম্প থেকে বের হতে না পারলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জানাতে হয়।
দীর্ঘ দিন ধরেই রোহিঙ্গাদের ঘিরে নিরাপত্তা আয়োজনেও বাংলাদেশ সরকারকে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এরপরও থামানো যাচ্ছে না সেখানকার অপরাধ চক্রগুলোকে। অন্তত ১১টি সশস্ত্র গ্রুপ সেখানে সক্রিয়। নিজেদের মধ্যে সংঘাত ছাড়াও তারা মাঝে মাঝে রোহিঙ্গা মাঝি (রোহিঙ্গা নেতা) খুন করছেন। ছয় বছরে ক্যাম্পে হত্যার শিকার হয়েছেন ১৭৬ জন। আর গত এক বছরে ৪৬ জন খুন হন। এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ২৪০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে মিয়ানমারের আরাকান স্যালভেশন আর্মিসহ (আরসা) ১১টি সশস্ত্র সক্রিয় গ্রুপের মধ্যে রয়েছে আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), ইসলামি মাহাজ, মাস্টার মুন্নার দল, চাকমা ডাকাত দল, নবী হোসেন ডাকাত দল, পুতিয়া ডাকাত দল, জাকির ডাকাত দল, সালমান শাহ ডাকাত দল, খালেক ডাকাত দল ও জাবু ডাকাত দল।
গত ছয় বছরে ক্যাম্পে অভিযানে ৪০০ আগ্নেয়াস্ত্র এবং পাঁচশ’ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি ৩৩২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সময়ে ৩৯ লাখের বেশি ইয়াবা ও ৪০ কেজি আইসসহ ১ হাজার ৬৯৭জন রোহিঙ্গাকে আইনের আওতায় নেয়া হয়। এছাড়া ৩৫৯ জন রোহিঙ্গা অপহরণের ঘটনায় ৭০টি মামলায় ৯৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে পরিমাণ অপরাধ বেড়েছে, তা ক্যাম্পসহ কক্সবাজারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য হুমকি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অর্থসহ অন্যান্য নিরাপত্তাজনিত বিষয়গুলো নিয়োজিত করা হলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
//জ//