
ঢাকায় তীব্র যানজটের কারণ জানাল ট্রাফিক পুলিশ
রাজধানীর মিরপুর-১ থেকে বিজয় সরণী হয়ে রাকিবুল ইসলামের গন্তব্যস্থল গুলশান। ঘড়ির কাটা ঠিক সাড়ে ১০টা। গুলশান নাভানা টাওয়ারে সামনের সড়কে কথা হয় তার সঙ্গে। বায়িং হাউসে কর্মরত রাকিব বলেন, সকাল আটটায় বের হয়েছি। এখন সাড়ে ১০টা বাজে। আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে গেল আজ। অথচ এ পথ আসতে আমার সময় লাগতো ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা।
শুধু রাকিব নন, তার মতো মঙ্গলবার সকালে যারা রাজধানীতে বের হয়েছিলেন এভাবেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথে আটকে থাকতে হয়েছে তাদের। দুপুর গড়িয়ে বিকেল চললেও এখনও সেই যানজটের চিত্র কাটেনি।
রমজানের দ্বিতীয় কর্মদিবসে রাজধানীজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। সেই সঙ্গে রোববার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবসের ছুটি। গেল তিন দিন ঢাকার সড়ক ছিল প্রায় পুরোপুরি ফাঁকা। যানজট বলতে গেলে ছিলই না। তবে রমজানের প্রথম কর্মদিবস সোমবার থেকে অফিস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকালও ছিল ভয়াবহ যানজট। বিশেষ করে অফিস ছুটির পর।
অফিস থেকে বাড়িতে ফিরছেন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাদের একজন মুকুল গতকালের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বললেন, কারওয়ান বাজার অফিস থেকে বিকেল সাড়ে চারটায় বের হয়ে সাড়ে ছয়টায় নিকেতনে পৌঁছালাম। যেখানে সাধারণত সময়ে লাগত ২০ থেকে ২৫ মিনিট।
তার কথা শেষ না হতেই আরেকজন বলছিলেন, আমিও কারওয়ান বাজার থেকে এসেছি। যাব গুলশান। কিন্তু জাহাঙ্গীর গেটের এসে বাস থেমে যায়। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে মহাখালী হেঁটে এসেছি। তারপর সেখান থেকে আবারও আরেকটি বাসে গুলশান এলাম।
মিরপুর থেকে প্রতিদিন শাহবাগ অফিস করেন আরেফিন আনিকা। অন্যদিন তার ঘণ্টা খানেক লাগতো। কিন্তু আজ ছিল পুরাই ব্যতিক্রম। সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে তার অফিস পৌঁছাতেই সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা। এই পথে শুধুমাত্র কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগ যেতে সময় লেগেছে এক ঘণ্টা।
কাকলী এলাকায় বলাকা পরিবহনের বাসচালক মুহিব বলেন, অনেকদিন পর এ রকম ভয়াবহ যানজট দেখছি। ফোনে আরেক ড্রাইভার জানালেন টঙ্গী পার হয়ে গেছে যানজট।
একই চিত্র রামপুরা-কুড়িল সড়কেও। সরেজমিনে দেখা গেছে, শুধু যানজট নয়, যানজটের কারণে গাড়ি পেতে দীর্ঘ সারিতে দিয়ে অপেক্ষা করছে সাধারণ মানুষ। ভিড় দেখা গেছে হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি এবং বিশেষায়িত চক্রাকার বাসের স্ট্যান্ডগুলোতেও।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান যানজটের তিনটি কারণ উল্লেখ করে বলেন, রাজধানীজুড়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। এতে রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ায় যানজট বেড়ে গেছে। এ ছাড়া রমজান মাসে অফিসের সময় কমে যাওয়ায় যানজট পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। আর তৃতীয় কারণ হলো, উত্তরা বা গুলশান মতো যেসব সড়কে দ্রুতগতির বেশি যান চলাচল করে, সেখানে হঠাৎ যানজটের সৃষ্টি হলে এর প্রভাব অন্য এলাকাগুলোতেও পড়ে।
//এল//