
ফাইল ছবি
জুলাই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত ও বিচার এবং পাশাপাশি যারা এভাবে আইনের অপব্যবহার করছে তাদের ব্যাপারে জরুরি তদন্তের দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ এর সদস্যবৃন্দ। সেসঙ্গে মিথ্যা ও সৃজিত মামলা দায়েরের ঘটনায় মানবাধিকার ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এইচআরএফবি’র তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে জুলাই ও আগস্ট ২০২৪ সময়কালীন আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আহত ও নিহতের উপর আধিপত্য এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি অনেককে জড়ানো হয়েছে। যাদেরকে কারো কারো রাজনৈতিক বা ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ মনে হয়, বা যাদের সাথে কারো কারো ব্যক্তিগত অন্তরঙ্গতা আছে। এ ধরণের উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়েরের ঘটনায় হিউম্যান রাইটস ফোরাম (এইচআরএফবি), বাংলাদেশ তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে।
সম্প্রতি অভিনেতা এবং এশিয়াটিক গ্রুপের একজন পরিচালক ইরেশ জাকেরসহ পেশাদার সাংবাদিকদের অন্তর্ভুক্ত করে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের সঙ্গে ৪০৮ জনকে আসামি করে ঢাকার মিরপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন জনৈক মোস্তাফিজুর রহমান, যার ছোট ভাই মাহফুজ আলম শ্রাবন (২১) গত ০৫/০৮/২০২৪ তারিখে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের চূড়ান্ত মুহূর্তে ঢাকার মিরপুর এলাকায় গুলি বর্ষণে নিহত হয়েছেন। নিহত তরুণ বিএনপি’র কর্মী বলে বাদী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন। বাদীর ভাই মাহফুজ আলম শ্রাবন ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে জীবন উৎসর্গ করা তরুণদের একজন। নিহত তরুণের মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে মামলা দায়ের হওয়ায় ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা কিংবা সংকট সৃষ্টি হতে পারে। জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে হতাহতের বিচার চেয়ে দেশজুড়ে যেসব মামলা হচ্ছে, এতে করে ভুক্তভোগীর পরিবার সঠিক বিচার পাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যায়।
গণহারে আসামি করায় মামলার তদন্ত ও বিচার বিঘ্নিত হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিতেও দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিবে বলে ধারণা করা যায়। এ পরিস্থিতিতে এটি স্পষ্ট যে, হয়রানি করার জন্য এ ধরণের মামলা দায়ের করা হচ্ছে, যার প্রভাব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। কাজেই, এ ধরণের মামলা গ্রহণে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার এবং ইরেশ জাকেরসহ অন্যান্য পেশাজীবী অরাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত উদ্দেশ্যমূলক সৃজিত মামলাগুলো তদন্ত সাপেক্ষে অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক। এছাড়া সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডসমূহে কারা কিভাবে কাদের নির্দেশে সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল তা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উদঘাটন করা প্রয়োজন। কেননা, কোন প্রমাণ ছাড়াই কারো বিরুদ্ধে হত্যা মামলার মত গুরুতর অভিযোগে মামলা দায়েরের ঘটনা নিশ্চিতভাবেই নিপীড়নমূলক বলে বিবেচিত হয় এবং একইসাথে তা অগ্রহণযোগ্যও বটে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক অভিযোগ ঢালাওভাবে আমলে নেয়ার ফলে যেভাবে মামলা বাণিজ্য, গ্রেফতার বাণিজ্য ও জামিন বাণিজ্যের বিকাশ ঘটছে এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচার বিঘ্নিত হবার ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি সার্বিকভাবে ন্যায়বিচার বিরোধী দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচারের সুযোগও উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।
এইচআরএফবি মনে করে, নিহত তরুণ শ্রাবনের হত্যাকাণ্ডে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জরুরি এবং একই সাথে এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিরা যেন দায়মুক্তি না পায় সেজন্য প্রয়োজনীয় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি, উদ্দেশ্যমূলক সৃজিত মামলায় কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছে। দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে ইরেশ জাকের এবং অন্যান্য যাদের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যোগ করা হয়েছে, তাদের নাম অতিশীঘ্রই যেন বাদ দিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেয়।
হিউম্যান রাইটস ফোরাম (এইচআরএফবি) সদস্যরা হলেন ড. হামিদা হোসেন, এক্সপার্ট, এইচআরএফবি,
অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, এক্সপার্ট, এইচআরএফবি, রাজা দেবাশীষ রায়, এক্সপার্ট, এইচআরএফবি, অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, চেয়ারপারসন, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), সচিবালয় এবং ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক, এইচআরএফবি, শাহীন আনাম, স্টিয়ারিং কমিটি সদস্য-এইচআরএফবি, এবং নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, জাকির হোসেন, স্টিয়ারিং কমিটি সদস্য-এইচআরএফবি এবং প্রধান নির্বাহী, নাগরিক উদ্যোগ, সারা হোসেন, স্টিয়ারিং কমিটি সদস্য-এইচআরএফবি এবং অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), রঞ্জন কর্মকার, স্টিয়ারিং কমিটি সদস্য-এইচআরএফবি এবং নির্বাহী পরিচালক, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট (স্টেপস), সালেহ আহমেদ, স্টিয়ারিং কমিটি সদস্য-এইচআরএফবি এবং নির্বাহী পরিচালক, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, সঞ্জীব দ্রং, স্টিয়ারিং কমিটি সদস্য-এইচআরএফবি এবং সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), সদস্য, এইচআরএফবি, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সভানেত্রী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ (বিএমপি), সদস্য, এইচআরএফবি, শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্মস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), সদস্য, এইচআরএফবি, খুশী কবির, সমন্বয়ক, নিজেরা করি, সদস্য, এইচআরএফবি, সরদার জাহাঙ্গীর হোসেন, নির্বাহী পরিচালক, এসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন (এএসএফ), সদস্য, এইচআরএফবি, শিপন কুমার রবিদাস, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) কেন্দ্রীয় কমিটি, সদস্য, এইচআরএফবি, সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস), সদস্য, এইচআরএফবি, দেওয়ান জামান, নির্বাহী পরিচালক, ফেয়ার, সদস্য, এইচআরএফবি, পল্লব চাকমা, নির্বাহী পরিচালক, কাপেং ফাউন্ডেশন, সদস্য, এইচআরএফবি, রোকেয়া রফিক বেবী, নির্বাহী পরিচালক, কর্মজীবনী নারী, সদস্য, এইচআরএফবি, গীতা দাস, সভানেত্রী, নারীপক্ষ, সদস্য, এইচআরএফবি, আবদুস সাত্তার দুলাল, সভাপতি, ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অব ডিজাবল্ড পিপলস অর্গানাইজেশনস (ন্যাডপো), সদস্য, এইচআরএফবি, আশরাফুন্নাহার মিষ্টি, নির্বাহী পরিচালক, ওমেন উইথ ডিজাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, সদস্য, এইচআরএফবি
ইউ