ছবি সংগৃহীত
খতনা করাতে গিয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত (মঙ্গলবার) বলেছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিটির রিপোর্ট আমাদের মনঃপুত হয়নি। আমরা পাঁচ সদস্যের নতুন কমিটি করে দিচ্ছি। কমিটি এক মাসের মধ্যে আয়ানের মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
নতুন এ কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের অ্যানেস্থেশিয়োলজিস্ট বিভাগের প্রধান ডা. এ বি এম মাকসুদুল আলমকে।
এর আগে, রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের একই বেঞ্চ শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় রিটের শুনানি শেষে আদেশের জন্য মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছিলেন।
ওইদিন উচ্চ আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘শুধু দেশেই নয়, সারা বিশ্বে মেডিকেল সেক্টরে মাফিয়া কাজ করে। পত্রিকায় নাম আসার জন্য নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষের কল্যাণ যাতে হয়, সে বিবেচনায় আদেশ দেয়া হবে।’
আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে প্রতিবেদন তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় এবং তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আনিচ উল মাওয়া আরজু। আদালতে পক্ষভুক্ত হওয়ার শুনানিতে ছিলেন মো. শিশির মনির। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট যায়েদ বিন আমজাদ।
রিটের পক্ষে আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ নিজেই শুনানি করেন। শুনানির সময় শিশুটির বাবা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, শুনানিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশে নিবন্ধিত এবং অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক, ব্লাড ব্যাংক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তথ্য জানানো হয়। তথ্য অনুযায়ী অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১ হাজার ২৭টি এবং নিবন্ধিত ১ হাজার ৫২৩টি।
এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনের ওপরে আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে।
এর আগে, গত ২৮ জানুয়ারি আয়ানের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে আদালত ওই প্রতিবেদনকে লোকদেখানো (আইওয়াশ) বলে মন্তব্য করেন।
এছাড়া আয়ানের প্রতি চিকিৎসকদের অবহেলা ছিল বলে উল্লেখ করেন আদালত। শিশুটির অ্যাজমা থাকার পরও ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালত বলেন, বাইপাস সার্জারিতেও এত ওষুধ প্রয়োজন হয় না, যতটা আয়ানের খতনার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে সরকারের অনুমোদনের পর হাসপাতাল চালুসহ ৪টি সুপারিশকে হাস্যকর বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুলের নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল আয়ান। গত ৩১ ডিসেম্বর তাকে ফুল অ্যানেস্থেশিয়া (জেনারেল) দিয়ে খতনা করায় সাতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়াই তার খতনা করানো হয় বলে অভিযোগ করেন তার বাবা শামিম আহমেদ। অপারেশনের কয়েক ঘণ্টা পরও জ্ঞান না ফেরায় সেখান থেকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয় আয়ানকে। সেখানে সাত দিন পিআইসিইউতে (পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) লাইফ সাপোর্টে রাখার পর ৭ জানুয়ারি মাঝরাতে আয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
ইউ