ছবি ভারতীয় পেঁয়াজ...
মাত্র আড়াই মাস বন্ধ ছিল ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি। আর তাতেই বাংলাদেশে পেঁয়াজের বাজারে আগুন লেগে। হু হু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। শতকের ঘরে গিয়ে দাঁড়ায় পেঁয়াজের মূল্য। জনমনে দেখা দেয় অসন্তোষ। সামনে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ইদুল আজহা। এমন অবস্থায় সরকার থেকে ব্যবসায়ীদের সতর্ক হওয়ার কথা বললে তাতে তারা কর্ণপাত করেনি। সরকার দ্রুত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। গেল সোমবার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৮ হাজার ৩০০ টন আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে এসেছে।
বুধবার (৭ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, গত সোমবার ৪ লাখ ৭৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশে এসেছে ৮ হাজার ৩০০ টন পেঁয়াজ। দেশের বাজারে অস্বাভাবিকভাবে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন জাতের দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে ৩৭৫ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে। কেজিতে যা পড়ছে ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা। ফরিদপুরের পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি করা হচ্ছে ৩১০ টাকা থেকে ৩৪০ টাকায়। কেজিতে যা পড়ছে ৬২ থেকে ৬৮ টাকা। রাজশাহীর পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি করা হচ্ছে ৩৭৫ টাকায়, যা কেজিতে পড়ছে ৭৫ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে ৩২৫ টাকায়, যা কেজিতে পড়েছে ৬৫ টাকা। অথচ ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরুর আগে এ বাজারেই প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছিল।
এদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির পর দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০- ৩৫ টাকা কমলেও সন্তুষ্ট হতে পারছে না ক্রেতারা। তারা বলছেন, যেভাবে দাম বেড়েছে, সেভাবে দাম কমেনি। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে পেঁয়াজের দাম এখনো নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। এ ছাড়া অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের জোর ভূমিকা নেই বলেও জানিয়েছেন তারা। তবে পাইকারি বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনো পেঁয়াজের দাম কমার প্রভাব পড়েনি। পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।
ঢাকার শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজেদ জানান, তিন দিন আগে আমরা পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৯০ টাকা দরে। ভারতীয় পেঁয়াজ চলে আসায় আজ ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি করেছি ৫৫-৬০ টাকা দরে। তবে দ্রুতই খুচরায়ও দাম কমে আসবে।
রাজধানীর সূত্রাপুর বাজারের খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলরাম পোদ্দার জানান, পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসার খবর পেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে পৌঁছেনি। আমরা আজ ৯০ থেকে ১০০ কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। দুই দিন আগেও ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। আমাদের বেশি দামে কেনা। তাই কম দামে বিক্রি করতে পারি না। তাহলে লোকসান গুনতে হবে। বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ শেষ হলেই সবাই ভারতীয় পেঁয়াজ কিনে বিক্রি করবেন।
ইউ