
ছবি সংগৃহীত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে পূর্ণ শাটডাউন কর্মসূচি দেশের আমদানি-রপ্তানি খাত ও অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ সংকট তৈরি করতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অবস্থায় দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানান।
রপ্তানিতে বর্ধিত লিড টাইম, পণ্য নষ্টের শঙ্কা
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) লিখিত বক্তব্যে বলেন, এনবিআরের অফিসগুলো সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকায় আমদানিকৃত কাঁচামাল সময়মতো খালাস করা যাচ্ছে না। এর ফলে রপ্তানিতে লিড টাইম বেড়ে যাচ্ছে, বন্দরে জমে থাকা পণ্য বৃষ্টি বা রোদে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আংশিক কর্মঘণ্টার কারণে ইউটিলাইজেশন পারমিট (ইউপি) পেতে ১০-১৫ দিন লেগে যাচ্ছে, যা রপ্তানিকে বিলম্বিত করছে। কিছু বিদেশি ক্রেতা ইতিমধ্যে অর্ডার বাতিল ও এয়ার শিপমেন্ট স্থগিতের হুমকি দিয়েছে।
শীত মৌসুমের অর্ডার হুমকিতে
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, জুন-জুলাই মাসে তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালসহ বিভিন্ন শিল্পে শীত মৌসুমের অর্ডার বাস্তবায়নের চাপ থাকে। এনবিআরের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হবে, যা ক্রেতাদের অর্ডার প্রত্যাহার বা ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এড়িয়ে চলার কারণ হতে পারে। এতে প্রতিযোগী দেশগুলো (ভারত, ভিয়েতনাম) লাভবান হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ব্যাংক ঋণ ও অর্থনৈতিক চাপ
জুন মাসে ব্যবসায়ীদের বার্ষিক ব্যাংক ঋণের মুনাফা পরিশোধের সময় হওয়ায় রপ্তানি আয় বিলম্বিত হলে নগদ প্রবাহ সংকট দেখা দেবে বলেও সতর্ক করা হয়। এছাড়া, এনবিআরের চলমান আন্দোলন দেশের রপ্তানি ইমেজ ক্ষুণ্ণ করতে পারে, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
জরুরি সমাধানের ৫ প্রস্তাব
ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে ৫টি জরুরি পদক্ষেপ চেয়েছেন:
১. এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে আমদানি-রপ্তানি সেবা চালু করা।
২. রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আলাদা করে আধুনিকায়ন করা।
৩. এনবিআরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
৪. রপ্তানি সহায়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত সংস্কার করা।
৫. অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে সংকট সমাধান।
আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান
ব্যবসায়ী নেতারা এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের "কমপ্লিট শাটডাউন" প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে আসার অনুরোধ জানান। তারা আশ্বাস দেন, চেয়ারম্যানের অপসারণ ছাড়াই সংস্কার সম্ভব এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান achievable.
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ, বিটিএমএ, এলএফএমইএবি, এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন শিল্প সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইউ