
ফাইল ছবি
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। উৎপাদন ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে কয়েকটি পণ্যের ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি প্রত্যাহারও করা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বাজেট প্রস্তাবনায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, “জাতীয় উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নির্দিষ্ট খাতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে কিছু খাতে ভ্যাট অব্যাহতির সময়সীমা বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
যেসব খাতে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে:
১. হাসপাতালের বেড উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ ও যন্ত্রাংশে ভ্যাট অব্যাহতি ২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
২. ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত এপিআই (এপিআই) উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদও ২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
৩. মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি কিছুটা হ্রাস করে ২০২৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
৪. এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতির সময়সীমা ২০২৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, তবে অব্যাহতির পরিমাণ কিছুটা হ্রাস করা হয়েছে।
5. ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ও ইলেকট্রিক ওভেন উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে।
৬. আইসিইউ সুবিধাসম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্স ও হাইব্রিড/ইলেকট্রিক যানবাহন-এ ভ্যাট অব্যাহতি ২০৩০ সাল পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে প্রযোজ্য থাকবে।
৭. সাবান ও শ্যাম্পুর কাঁচামাল (এলএবিএসএ ও এসএলইএস) উৎপাদনে অব্যাহতির মেয়াদ ২০২৭ সালের ৩০ জুন** পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
৮. লিথিয়াম ও গ্রাফিন ব্যাটারি উৎপাদনে ২০২৭ সাল পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ভ্যাট অব্যাহতি এবং ২০২৮-৩০ পর্যন্ত ৫% হারে ছাড় দেয়া হয়েছে।
৯. ইলেকট্রিক বাইক (ই-বাইক) উৎপাদনে ৫% অতিরিক্ত ভ্যাট ২০৩০ সাল পর্যন্ত মওকুফ থাকবে।
১০. রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এসি ও কম্প্রেসর উৎপাদনে ব্যবহৃত কিছু উপকরণ আমদানিতে **সম্পূরক শুল্ক ২০২৮ সাল পর্যন্ত অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
যেসব পণ্যের ভ্যাট অব্যাহতি প্রত্যাহার:
* স্টেরাইল সার্জিক্যাল ক্যাটগাট
* সার্জিক্যাল স্যুচার
* লিফটস অ্যান্ড স্কিপ হোয়ইস্টস
* সেট-টপ বক্স
* বলপয়েন্ট কলম
অর্থ উপদেষ্টা জানান, অর্থনীতিতে ভারসাম্য রক্ষা এবং ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কর অব্যাহতির সময়সীমা সমন্বয় করা হচ্ছে। বিশেষ করে শিল্প ও প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদনে উৎসাহ দিতে সরকারের এই উদ্যোগ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ সিদ্ধান্তগুলো স্থানীয় শিল্পকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে সহায়ক হবে, যদিও কিছু পণ্যে কর প্রত্যাহার ভোক্তামূল্যে প্রভাব ফেলতে পারে।
ইউ