ঢাকা, বাংলাদেশ

শনিবার, , ১২ জুলাই ২০২৫

English

অপরাধ

বিদেশে গবেষণা শেষে দেশে ফিরে খুললেন মাদকের ল্যাব!

উইমেনআই২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:২৭, ২ আগস্ট ২০২২; আপডেট: ১৮:২৯, ২ আগস্ট ২০২২

বিদেশে গবেষণা শেষে দেশে ফিরে খুললেন মাদকের ল্যাব!

বিদেশে গবেষণা শেষে দেশে ফিরে খুললেন মাদকের ল্যাব!

দেশের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা শেষে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে পড়াশোনার সময় পরিচিত হন নতুন ধরনের মাদকের সঙ্গে। এরপর মাদকের ওপর গবেষণা শুরু করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে এসে মাদক উৎপাদনে খোলেন গবেষণাগার। এমনকি বিদেশে ভ্রমণের আড়ালে আবার পার্সেলের মাধ্যমে আমদানি করতেন নতুন ধরনের মাদক। এই মাদকের অর্থ পরিশোধ করা হতো হুন্ডির মাধ্যমে। আমদানি করা মাদক বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন পার্টিতে সরবরাহ করতেন তিনি।

র‍্যাব বলছে, নতুন নতুন মাদক কীভাবে উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি ও বাজারজাত করা যায় তা নিয়ে বিস্তর অধ্যয়ন করতেন ওনাইসী সাঈদ। এ লক্ষ্যে তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে নতুন ধরনের মাদক কুশ (সিনথেটিক মারিজুয়ানা) তৈরির ল্যাব ও প্ল্যান্ট স্থাপন করেছিলেন।

এক্সট্যাসি নামক একটি নতুন মাদকের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পেরে র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে ওনাইসী সাঈদ নামে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে র‍্যাবের একটি দল। এ সময় বাংলাদেশে সর্বপ্রথম অপ্রচলিত মাদক এক্সট্যাসি (মলি নামেও পরিচিত), কুশ, হেম্প, এডারল, ফেন্টানিলসহ বেশ কয়েক ধরনের মাদক উদ্ধার এবং প্রায় ৩ কোটি টাকা সমমূল্যের দেশি ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়। এক্সট্যাসি হলো ৩,৪-মিথিলিন ডাই অক্সি মেথাফেটামাইন। 

জেলখানার ৬০ শতাংশ আসামিই মাদক মামলার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীজেলখানার ৬০ শতাংশ আসামিই মাদক মামলার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খোন্দকার আল মঈন।

খোন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রচলিত নয়; কিন্তু বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রচলিত এমন কিছু মাদকের ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। এতে আমাদের যুবসমাজ আসক্ত হয়ে উঠছে। তার প্রমাণ এই নতুন মাদকের সন্ধান। র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১-এর অভিযানে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে ওনাইসী সাঈদকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ১০১ গ্রাম কুশ, ৬ গ্রাম হেম্প, দশমিক ০৫ গ্রাম মলি, ১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩ পিচ এক্সট্যাসি বড়ি, ২৮ পিচ এডারল ট্যাবলেট এবং ২ কোটি ৪০ লাখ নগদ টাকা ও অর্ধলক্ষাধিক মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়েছে।

পরে ওনাইসী সাঈদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্টের (গ্রিন হাউসের মতো) মাধ্যমে অভিনব পন্থায় কুশ তৈরির প্ল্যান্ট ও সেটআপ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওনাইসী সাঈদ তাঁর মাদক কারবার সংশ্লিষ্টতার নানা তথ্য দিয়েছেন।

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, ‘ওনাইসী সাঈদ বাংলাদেশে একটি স্বনামধন্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে আমেরিকায় যান। সেখানে বিবিএ ও মালয়েশিয়ায় গিয়ে এমবিএ সম্পন্ন করেন। ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তিনি।’ 

র‍্যাবের দেওয়া তথ্য মতে, থাইল্যান্ডে থাকা অবস্থায় রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ফয়সাল নামের এক যুবকের সঙ্গে ওনাইসীর পরিচয় হয়। তাঁর মাধ্যমে তিনি নতুন নতুন মাদক সম্পর্কে জানতে পারেন। ব্যবসায়িকভাবে নতুন মাদক কারবারে আগ্রহী হন। ফয়সালই প্রথম বিভিন্ন ধরনের অপ্রচলিত মাদক সরবরাহ করে আসছিলেন। থাইল্যান্ড থেকে বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করা ফয়সালেই নতুন মাদক সরবরাহকারী। আর এভাবেই ওনাইসী সাঈদ আন্তর্জাতিক মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে ওনাইসী সাঈদ জানান, বাংলাদেশে নতুন মাদক এক্সট্যাসির বিস্তারে অন্যতম হোতা তিনি। প্রায় চার বছর ধরে এক্সট্যাসিসহ অন্যান্য উচ্চমূল্যের মাদকের কারবারের সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশে তাঁর ৭ / ৮ জন সহযোগী রয়েছেন।

পার্সেলে, কখনো নিজে বহন করে আনতেন নতুন মাদক। এক্সট্যাসি, কুশ, হেম্প এবং মলি, এডারল, ফেন্টানিলসহ অন্যান্য মাদক পার্সেলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করে থাকেন। মাঝে মধ্যে ওনাইসী সাঈদ নিজেও বিদেশে গিয়ে লাগেজে এসব মাদক দেশে আনতেন। তবে পার্সেলে মাদক আনার ক্ষেত্রে নিকটাত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবদের নাম ঠিকানা ব্যবহার করতেন। আর হুন্ডির মাধ্যমে সরবরাহকৃত মাদকের অর্থ পরিশোধ করতেন তিনি।

ওনাইসী জানান, অভিজাত পরিবারের সন্তানেরা এসব মাদকের ক্রেতা। অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন পার্টিতে চাহিদার ভিত্তিতে সরবরাহ করতেন। তাঁর মাদকের ব্যবহার হতো বিভিন্ন হোটেল-বারের পার্টিতে।

জিজ্ঞাসাবাদে ওনাইসী সাঈদ জানিয়েছেন, তিনি ২০১৪ সালের পর থেকে ধূমপান ও অ্যালকোহলে আসক্ত হলেও নিজে কখনো নতুন মাদকে আসক্ত হননি। তবে নতুন বিভিন্ন মাদকের প্রতি আগ্রহ থেকেই এ নিয়ে অধ্যয়ন এবং গবেষণা শুরু করেন। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ পিস কুশ মাদক তৈরি করে তা বিক্রি করতেন ওনাইসী। প্রতি পিস তৈরিতে তার সব মিলে খরচ হতো ৪ / ৫ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি তা বিক্রি করতেন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়।’

পার্সেলে ও নিজে বহন করার সময় বিমানবন্দরে তল্লাশিতে কেন ধরা পড়েনি জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘তিনি নিজে গত ডিসেম্বর ও গত এপ্রিলে লাগেজে করে এই মাদক আনেন। কিন্তু বাংলাদেশে কখনো তাঁর মাদকের চালান আটকা পড়েনি। তবে কিছুদিন আগে কানাডাতে একটি চালান আটকে যায়।’

পার্সেল আনার ক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের নাম ঠিকানা ব্যবহার করলেও তাঁরা মাদক আনার ব্যাপারে কিছু জানতেন না উল্লেখ করে কমান্ডার মঈন বলেন, বিশেষ প্রক্রিয়ায় আনা সেই মাদকের পার্সেল ওনাইসী নিজে রিসিভ করতেন। আত্মীয়-স্বজনেরা মনে করতেন, উন্নত দেশে তাঁর যাতায়াত, পার্সেল আসা স্বাভাবিক। তবে পার্সেলে যে মাদক আসছে তা তিনি ছাড়া অন্য কেউ জানতেন না।’ 

জানা গেছে, ওনাইসী সাঈদের বিরুদ্ধে তিন মামলা নতুন মাদকের আমদানি, প্রক্রিয়াজাতের বিষয়টি তদন্ত করবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তিনি এই নতুন মাদকের আমদানি করতে গিয়ে বিদেশে মুদ্রা অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেছেন। সব মিলে তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, মাদক মামলা, বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হবে। সিআইডি মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত করবে।

র‍্যাব কমান্ডার মঈন বলেন, ‘আমরা জব্দকৃত সব মাদক ল্যাবে পরীক্ষা করব। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, আফিমের চেয়ে ৫০ গুণ শক্তিশালী হচ্ছে জব্দ ফেন্টালন। আর মারিজুয়ানার চেয়ে ১২ গুণ শক্তিশালী মাদক কুশ। এসব মাদক সেবনে স্নায়ু উদ্দীপনা তৈরি করে। ৪ / ৫ ঘণ্টার জন্য পার্টি মুড তৈরি করে। এখন পর্যন্ত সে ১০০ গ্রাম কুশ মাদক বিক্রি করেছে ৩ লাখ টাকায়। এভাবে ৪০০ গ্রাম বিক্রি করেছে।

ইউ

‘নির্বাচন হচ্ছে না বলেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে’

‘সরকার কোনোভাবেই মব জাস্টিস বরদাশত করে না’

এক মাসে যত টাকা পেল এনসিপি

পল্লবীতে চাঁদার দাবিতে সশস্ত্র হামলা: ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গুলিবর্ষণ

মবকারীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না কেন, প্রশ্ন তারেক রহমানের

ছায়া তদন্তে নেমেছে র‌্যাব : ডিজি

‘মিটফোর্ডের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটছে কিছু দল’

বর্ষায় পেটের সমস্যা কমাতে খেতে পারেন এই খাবারগুলো

সোহাগ হত্যা মামলায় রবিনের স্বীকারোক্তি, টিটনের ৫ দিনের রিমান্ড

ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, যা বললেন বাঁধন

ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৯১

জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে: দুলু

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা

ওয়ালমার্টের পোশাক অর্ডার স্থগিত: বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে ধাক

সারা দেশে আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে: আইজিপি