ছবি: নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায়...
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যালজী ক্লাবের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক মামুন। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধাক্ষ্য এয়ার কমরেড (অব:) এশফাক এলাহী চৌধুরী, মহিলা পরিষদের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম, জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাড. মাকসুদা আক্তার লাইলী, ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি এন্ড লবী অ্যাড. দীপ্তি সিকদার ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ^বিদ্যালয়ের সোশ্যালজী ক্লাবের মডারেটর মানজুমা আহসান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন আনিকা ইবনে নওশীন প্রেসিডেন্ট অফ সোশ্যলজী ক্লাব।
সভায় এস.এম আনোয়ারুল কায়েস শিমুল বলেন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যালজী ক্লাব সব সময় শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মসূচি করে আসছে। এসময় তিনি মহিলা পরিষদকে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভা করার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং তরুণদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সহিংসতা মুক্ত ও ক্যাম্পাস গড়ে তুলবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।
যৌন নিপীড়ন ও উক্ত্যক্ত্যকরণ বন্ধে, ধর্ষণ প্রতিরোধে হাইকোর্ট বিভাগের দিকনিদের্শনামূলক রায় সম্পর্কে আলোচনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাড. মাকসুদা আক্তার লাইলী, নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে তরুণ সমাজের ভ’মিকা বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি এন্ড লবী অ্যাড. দীপ্তি সিকদার।
সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ১৯৭০ সাল থেকে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ও নারী-পুরুষের জন্য সমতাপূর্ণ সমাজ গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কন্যাশিশুরা সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জেন্ডার বৈষম্যের শিকার হয়। জেন্ডার বৈষম্য দূর করে জেন্ডার সংবেদনশীল পরিবার ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। আজকের তরুণ সমাজ ভবিষ্যতের কর্ণধার। তাই তরুণদের নিজেদের সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে ও নারী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।
শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ইশরাত জাহান, রায়না আক্তার, জোবায়দা আক্তার রিনি,মারিয়া মনোয়ারা,ইমতিয়াজ ইকবাল, মো.সাইফুর রহমান। শিক্ষার্থীরা পরিবার সমাজ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতা মুক্ত রাখার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।
মতবিনিময় সভার সভাপতি উপউপাচার্য ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক মামুন বলেন, এখনো আমাদের দেশে পুরুষ নিয়ন্ত্রিত সমাজ ব্যবস্থা বিদ্যমান। আমরা যদি নারীদের সন্মান ও যোগ্য মর্যাদা না দিই তাহলে আমাদের দেশ উন্নত হতে পারবেনা।নারীদের কর্মসংস্স্থানের পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরী। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সহিংসতা মুক্ত এবং ছেলেমেয়ের প্রতি কোন বৈষম্য করিনা। আমরা চাই প্রত্যেকের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ থাকুক এবং তাদের জীবনে কর্মক্ষেত্রে ও পরিবারে এবং সম্পদ - সম্পত্তিতে সমান অধিকার নিশ্চিত হোক। তিনি শিক্ষার্থীদের পরিবারে সমতা চর্যা করার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদকে ভবিষতে এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন করার জন্য অনুরোধ জানান।
মতবিনিময় সভায় শিক্ষক,শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেত্রীবৃন্দসহ মোট ৮০ জন উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন আনিকা ইবনে নওশীন প্রেসিডেন্ট অফ সোশ্যলজী ক্লাব।
ইউ