
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গো-খাদ্যের হাট
ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের নেংড়ার বাজারে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে গো-খাদ্য। স্থানীয় ও গো-খাদ্য ব্যাবসায়িরা জানালেন, বর্যা মৌসুম শুরু থেকে আশ্বিন কার্তিক মাস পর্যন্ত এ অঞ্চলে খাদ্যের সংকট চলে।
বিশেষ করে মা গরুদের খাবার সংকট দেখা দেয় তীব্রভাবে। লেংড়ার বাজারে ঘাস কিনতে আসা কৃষক রমিজ উদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, দুটি গাভী মা হয়েছে। মা গাভীরা ভূষি খৈল ভাতের মারের পাশাপাশি কাঁচা ঘাস ও কাইসাবন খেতে বেশী পছন্দ করে। তাই প্রতিদিন দুই বোঝা করে সংগ্রহ করি।
তিনি আরো বলেন, প্রতি বোজার দাম ১০০-১৫০ টাকা দামে ক্রয় করতে হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে রমিজ উদ্দিন বলেন, গত বচ্ছর ক্রয় করতে হয়েছে ৪০-৭০ টাকায়। কাঁচা ঘাস মা গাভীকে খাওয়ালে গাভী দুধ ভালো দেয় এবং বাচ্চা ভালো দুধ পেয়ে থাকে।
সেই সঙ্গে বাচ্চা (বাছুরের) গ্রোদ খুবই দ্রুত বাড়ন্ত হয়।
ঘাসের হাটে কথা হয় বিক্রেতা মজিবুর রহমান, ফালান শেখসহ বেশ কয়েকজন গো-খাদ্য (কাঁচা ঘাস) বিক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, যমুনা নদী পার হয়ে তারা ডিপচর থেকে কাঁচা ঘাস ও কাইসা বন হতো দরিদ্র নারী ও যুবকদের মাধ্যমে তারা সংগ্রহ করেন। নৌকা বাইয়া যমুনা নদী পাড় হয়ে গাবসারা মেঘার পটলসহ কয়েকটি চরে সারাদিন ঘাস সংগ্রহ করেন। প্রতি বোজা তাদের দেওয়া হয় ৩০-৪৫ টাকা করে। এক প্রশ্নের জবাবে ফালান শেখ বলেন জনপ্রতি ১৫-২০ বোঝা সংগ্রহ করতে পারেন।
নৌকা বাইয়া যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে ঘাস নিয়ে চলে আসে নলিন ও পাতালকান্দি ঘাটে। সেখান থেকে ভ্যানে করে নলিন বাজার ও লেংরার বাজারে নিয়ে আসা হয়। আর এখান থেকেই ক্রেতা বিক্রেতা কেনা-বেচা করেন বলে জানালেন তিনি।
বিক্রেতা মজিবুর রহমান আরও বলেন সারা বছর ধরেই কমবেশি বিক্রি হলে ও বর্যা মৌসুমে বেশী বিক্রি হয়ে থাকে। কারণ এই সময়ে গো-খাদ্যের সংকট থাকার অন্যতম কারণ বাড়ীর আনাচে কানাচে বৃষ্টিসহ বর্ষার পানি থাকায় ঘাস মরে পঁচে যায়। গরু ছাগল হাচার দেওয়া যায় না। ধানের খড় ও বৃষ্টির পানি চুইয়ে চুইয়ে পালা নষ্ট হয়ে যায়। বাকি অবশিষ্ট যা থাকে গরু খেতেও চায়না। অন্য দিকে পানি থাকায় গরু কোথাও হাচার ও দেওয়া যায় না। ফলে ঘাসের বাজার হাট থেকে ঘাস সংগ্রহ করতে হয়।
তিনি আরো বলেন, আগে বুট ছোলা কলাই ভূযি খৈলসহ চিটা গুড় খাওয়া নো হতো মা গাভীদের। কিন্তু এখন সব কিছুর মুল্য বৃদ্ধি হাওয়াতে গরীব কৃষকেরা গাভীকে খাওয়াতে পারেন না। তাই কাঁচা ঘাসের ওপর নির্ভর হতে হচ্ছে এ অঞ্চলের যমুনা পাড়ের মানুষদের।
//জ//