
সংগৃহীত ছবি
শিবগঞ্জ( চাঁপাইনবাবগঞ্জ) সংবাদদাতা: আগামী সাত জুন পবিত্র ঈদল আযহা উপললক্ষে পশু জবেহ করতে ব্যবহারিত দেশীয় অস্ত্র বা হাতিয়ার তৈরী ও বিক্রীতে শিবগঞ্জে ব্যস্ত সময় পার করছে শত শত কামার। ভিড় জমাচ্ছে সাধারণ মানুষ তাদের কাছে।
কেউ কিনছেন,ক্উে বাড়িতে থাকা হাতিয়ারগুলো শান দিতে ঘন্টার ঘন্টরর কামারের দোকানে বসে ধর্ণা দিচ্ছে। হাতিয়ারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, দা, ছুরি, চাকু, চাপ্পর, কুড়াল, কানতাই, হাসুয়াসহ ইত্যাদি। গ্রাহকের চাপে ব্যস্ততায় হাঁফিয়ে উঠছেন কামাররা। সরেজমিনে গিয়ে মোবারকপুর উপটোলা গ্রামের শ্রী নিবারণ কর্মকার ও তার বাবা শ্রী দিলীপ কামার,জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা প্রায় ১৫দিন আগে থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছি। একদিকে সাধারণ মানুষের হাতিয়ারগুলো শান দিয়ে দিতে হচ্ছে,অন্যদিকে বাজারে বিক্রীর জন্য নতুন হাতিয়ার তৈরী করতে হচ্ছে। সামনে ঈদুল আযহারের দিন সকাল আটটা পর্যন্ত এভাবেই ব্যস্তই থাকতে হবে।বছরে মাত্র একবার আমাদের জন্য সুযোগ আসে। এ মৌসুমে প্রায় দেড় লাখ টাকার হাতিয়ার বিক্রী হবে এবং প্রায় এক লাখ টাকার হাতিয়ার শান দেয়া বাবদ আয় হবে।তারমধ্যে খরচ বাদে প্রায় দুই লাখ লাভ থাকবে। মনাকষা বাজারের পাশে ভঞ্জন,সুবির , সোনা,নিরঞ্জন সহ প্রায় ১০ জন কামারের কাজ করেন। সুবীর জানান আমাদের বাপ দাদারাও এ কাজ করতো। আমরাও করছি। ঈদুল আযজা উপল্েকষ চরম ব্যস্ত সময় পার করছি। আশা করি এ মৌসুমে খরচ বাদে এক লাখ টাকা আয় হবে। কিছু হাতিয়ার তৈরী করে বিক্রী করি। বিক্রী করা হাতিয়ার গুলো হলো লোহার ও কাস্টিন দিয়ে তৈরী করা কোপদা বা চাপাতি ও দাও ছয় শো টাকা কেজি দরে বিক্রী করি। হাসুয়া, বড় বটি, হাসুয়া তিন শ টাকা করে ও ছোট হাসুয়া ও বটি দুই শ টাকা করে বিক্রী করছি। তাছাড়া ছোরা, চাকু দেড় শে থেকে এক শ টাকা করে বিক্রী করছি। অন্যদিকে শান দেয়ার ক্ষেত্রে বটি ও হাসুয়া প্রতি ৫০- ৭০ টাকা,দাও, কোপদা বা চাপাতী প্রতি দুই শ টাকা,ছোড়া ও চাকু শান দেয়ার ক্ষেত্রে ৪৫/৪৫টাকা করে । মনাকষা বাজারে ভঞ্জন কামারের দোকানে অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সাত্তার আলি জানান ঈদুল অযহার সময় বাহিহিাতিয়ার শান দিতেই হয়। তাই চাকু, ছোড়া, হাসুয়া, বটি ও চাপাতী সহ মোট ছয়টি হাতিয়ার শান দেয়ার জন্য দিয়েছি। দুদিনেও পাইনি। কামার খুব ব্যস্ত থাকছে। আমার মত অনেকেই একই কাজে এসেছে। দেরী হলেও কিছু করার নেই। শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কামারের দোকানে ঘুরে একই চিত্র পাওয়া গেছে। ঈদ যতই ঘনিযে আসছে কামারদের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন দেশীয় হাতিয়ার তৈরী শিবগঞ্জে একটি ঐতিহ্যবাহী শ্রেষ্ঠ কুটির শিল্প। যা এলাকার শতাধিক কামাররা নিজ হাতে তৈরী করে। বিশেষ করে ইদূর আযহার সময় আমাদর মুসলমান সম্প্রদায়ের সুষ্ঠুভাবে পশু কোরবানী করার ক্ষেত্রে কামাররা হাতিয়ার তৈরী ও শান দিয়ে আমাদের যে সহায়তা করে তা অতুলনীয়। এরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মধ্যে পড়ে। তাদের এ কাজটি সম্প্রসারণ ও তাদের জীবন মান উন্নয়নে আমরা কাজ করবো ইনশাল্লাহ।
//এল//