ছবি সংগৃহীত
মাসাধিককাল ধরে রেকর্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়েছেন বাংলাদেশের মানুষ। সবার প্রাথণা ছিল কবে নামবে স্বস্তির বৃষ্টি। অবশেষে রবিবার রাত সাড়ে নয়টায় রাজধানী ঢাকাসহ একাধিকস্থানে একইসঙ্গে শুরু হয় স্বস্তির শিলাসহ বৃষ্টি ও বজ্রপাত। শান্তির পরশ বুলিয়ে স্বস্তি আসে জনজীবনে। তবে রাজধানীসহ দেশের ছয় জেলায় গতকাল রবিবার কালবৈশাখী ও বজ্রপাতে মা-ছেলে ও স্কুলশিক্ষার্থীসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, কালবৈশাখীসহ শিলাবৃষ্টিতে তপ্ত রাজধানীতে আবেশ ছড়িয়ে দিয়েছে। এটিই এই মৌসুমে রাজধানীতে প্রথম শিলাবৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রাত ৯টার পর ঢাকার আগারগাঁওয়ে সর্বোচ্চ ৫৯ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টায় ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলায় সর্বোচ্চ ৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও সারাদেশে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ শিলা বৃষ্টির আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে দিনের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি পর্যন্ত কমে যেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আবহাওয়া বার্তায় আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরণের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অধিকাংশ জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। রবিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গায়, ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবার ৩১ মার্চ থেকে দেশে তাপপ্রবাহ শুরু হয়, এ পর্যন্ত টানা ৩৬ দিন ধরে দেশে তাপপ্রবাহ চলছে। চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় যশোরে। এদিকে পরবর্তী পাঁচ দিনের আবহাওয়া পরিস্থিতে বলা হয়েছে, এ সময়ও বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। সে হিসেবে আগামী এক সপ্তাহ টানা বৃষ্টি হতে পারে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঝোড়ো বাতাসে নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবনের দেয়াল ভেঙে পাশের টিনশেড ঘরে পড়ে ঘুমিয়ে থাকা রেশমা নামে যুবতীর মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন তিন শিশুসহ ৭।
টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইলের খিলপাড়া সড়কে বজ্রপাতে ওয়াজেদ আলী খান (৫০) মারা যায়। জামালপুর জেলার সাপধরী ইউনিয়নে বজ্রপাতে আব্দুল মজিদ (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের মধ্যবেতছড়ি গ্রামে রবিবার ভোরে ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বজ্রপাতে একটি টিনের ঘরে আগুন লেগে হাসিনা বেগম (৩০) ও ছেলে হানিফ মিয়ার (৮) মৃত্যু হয়। মাটিরাঙ্গায় বজ্রপাতে সমিকা ত্রিপুরা (২৬) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। রাঙামাটি জেলা কাউখালী উপজেলায় বজ্রপাতে আর্ষা চাকমা (১৪) নামে এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।
ইউ