প্রজনন গবেষণায় মহাকাশে হনুমান পাঠাবে চীন
বর্তমানে মহাকাশের জন্য হনুমানদের প্রশিক্ষণ দেওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন চীনা গবেষকরা। তাই নতুন তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে এই পরীক্ষা চালানো হবে। এমনটাই প্রকাশিত হয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক রিপোর্টে।
ঝাং লু জানিয়েছেন, চীনা স্পেস স্টেশনের বৃহত্তম মডিউলটি জীববিজ্ঞানের পরীক্ষানিরীক্ষার উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই এই পরীক্ষাটি চালানো হবে। এই পরীক্ষা মাইক্রোগ্রাভিটি এবং মহাকাশে জীবের অভিযোজন সম্পর্কে আমাদের আরও স্পষ্ট ধারণা পেতে সাহায্য করবে।
তবে, এর আগেও মহাকাশে জেব্রা ফিশ এবং পোকামাকড়-সহ ক্ষুদ্র প্রজাতির জীবের প্রজনন করা হয়েছে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন ফেরত শুক্রাণু থেকে জন্মানো ইঁদুরের ছবি ভাইরাল হয়। গবেষকদের মতে, ইঁদুর এবং প্রাইমেটদের ক্ষেত্রে এই ধরনের গবেষণা করার বিষয়ে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেইগুলো কীভাবে অতিক্রম করা যায়, তাই নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
স্পেস স্টেশনে সৌর বিকিরণ পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ১০০ গুণ বেশি। এই মহাজাগতিক রশ্মির ০.৫এমএসবি গড় দৈনিক প্রভাবে শুক্রাণু-সহ জীবন্ত কোষের ডিএনএ কোডের ক্ষতি হতে পারে।
মাইক্রোগ্রাভিটি শুক্রাণুর উপরেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। ১৯৮৮ সালে জার্মান গবেষকরা একটি রকেটে মহাকাশে ষাঁড়ের বীর্যের একটি নমুনা পাঠিয়েছিলেন। পরে দেখা যায়, এই শুক্রাণুগুলি কম মাধ্যাকর্ষণে অনেক দ্রুত সাঁতার কাটতে সক্ষম হচ্ছে। যদিও এতে প্রজনন ক্ষমতা বাড়বে কিনা, তা জানা যায়নি।
আরেক মহাকাশ পরীক্ষায় দেখা গেছে, মাছের ডিম মহাকাশে নিষিক্ত হতে পারে। ১৫ দিনের কক্ষপথের উড়ানের সময় স্বাভাবিকভাবেই সেটি বাড়তে পারে। এর থেকে এটাই বোঝা যায় যে, মহাকাশে সংক্ষিপ্ত ক্ষেত্রে প্রজননে খুব বেশি সমস্যা না-ও হতে পারে।
অন্যদিকে ফ্রিজ-ড্রায়েড ইঁদুরের শুক্রাণুর নমুনাও স্পেস স্টেশনে নয় মাস ধরে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। পরে সেটি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, শুক্রাণু ডিএনএ সামান্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। তবে এটি ইঁদুরের ডিম নিষিক্ত করার জন্য এবং আপাত স্বাস্থ্যকর ছানা তৈরির ক্ষেত্রে কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। প্রজনন হারেরও হেরফের হয়নি।
বর্তমানে তিয়াংগং স্পেস স্টেশনে তিনজন মহাকাশচারী রয়েছেন- চেন ডং, কাই জুয়েজ এবং লিউ ইয়াং।
//জ//