
ফাইল ছবি
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে ‘প্রশাসনিক নির্বাচন’ উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিএনপি।
রোববার (২২ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান। মামলাটি থানায় নম্বর-১১ হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
মোট ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—
-
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
-
সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, এ কে এম নূরুল হুদা, কাজী হাবিবুল আউয়াল
-
সাবেক নির্বাচন কমিশনার আব্দুল মোবারক, আবু হানিফ, ব্রিগেডিয়ার (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী
-
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
-
সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ, এ কে এম শহীদুল হক
-
সাবেক এনএসআই, ডিজিএফআই ও এসবি প্রধান (নাম উল্লেখ করা হয়নি)
-
ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল আলম
মামলার অভিযোগ কী?
মামলার বাদী সালাহ উদ্দিন খান অভিযোগ করে বলেন,
“২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন ছিল দিনের ভোট রাতে করার নির্বাচন। এসব নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও ক্ষমতাসীন ব্যক্তি সম্মিলিতভাবে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় ‘নির্বাচন’ সম্পন্ন করেছেন। শেখ হাসিনা নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন—জনগণের ভোট ছাড়াই।”
তিনি আরও জানান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা অভিযোগপত্র ২০১৮ সালেই নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কমিশন সে সময় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
বর্তমানে সেই অভিযোগের ছায়ালিপি ও আলামতসহ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য
শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,
“অভিযোগকারী দাবি করছেন, আসামিরা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটগ্রহণ ও ফল ঘোষণা করেছেন। এসব অপরাধমূলক কার্যক্রমের অভিযোগ এনে তিনি মামলা করেছেন। আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে মামলা রেকর্ড করবো।”
প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব
বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নানা সময় অভিযোগ এলেও এবার সরাসরি মামলা দায়ের করায় বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি উল্লেখযোগ্য আলোচনার জন্ম দিতে পারে।
তবে এখনো পর্যন্ত আওয়ামী লীগ বা অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উপসংহার:
বিএনপির এই আইনি পদক্ষেপ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। আসামিপক্ষ কীভাবে আইনি বা রাজনৈতিকভাবে সাড়া দেয়—তা ভবিষ্যতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
ইউ