সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপোর ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গত বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপোরের একটি সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সাক্ষাৎকারটি বাতিল হয়েছে। কারণ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির অনুরোধে সাক্ষাৎকারের সময় মাথায় হিজাব (স্কার্ফ) পরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ান আমানপোর। মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার খ্যাতিমান সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপোর বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে নানা পরিকল্পনার পর প্রায় আট ঘণ্টা ধরে আমরা লাইট, ক্যামেরা ও অনুবাদের সরঞ্জাম প্রস্তুত করেছিলাম। সাক্ষাৎকার শুরু হওয়ার ৪০ মিনিট পরে একজন সহকারী এসে বলেন, প্রেসিডেন্ট রাইসি আমাকে মাথায় স্কার্ফ পরতে বলছেন, কারণ এখন পবিত্র মহররম ও সফর মাস চলছে। কিন্তু আমি স্কার্ফ পরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি। এরপর তিনি সাক্ষাৎকারটি বাতিল করেছেন।’
আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
আরেকটি মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, অতীতে আমাপনপোর যখন ইরান বা আফগানিস্তানের মতো দেশে সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য গিয়েছিলেন, তখন মাথায় স্কার্ফ পরেছিলেন। ক্রিশ্চিয়ান আমানপোর এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, যে দেশে স্কার্ফ পরার প্রয়োজন নেই, সে দেশে আমি স্কার্ফ পরব না। আমি এখন নিউইয়র্কে আছি। এখানে মাথায় স্কার্ফ পরাসংক্রান্ত কোনো আইন নেই বা ঐতিহ্য নেই। এর আগে ইরানের কোনো প্রেসিডেন্ট এ ধরনের আবদার (মাথায় স্কার্ফ পরার) করেননি।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য ইরান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে পুলিশ হেফাজতে থাকা ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সঠিকভাবে হিজাব না পরার কারণে তেহরান থেকে আমিনিকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ। পরে তাঁর মৃত্যু হলে পুলিশ দাবি করে, হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন। তবে সাধারণ মানুষের ধারণা, পুলিশের নির্যাতনের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এরপর হিজাব আইন সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরানের মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস।
ইরানের আইনে রয়েছে, সাত বছরের বেশি বয়সী নারীদের ধর্মীয় হেড স্কার্ফ (হিজাব) পরা বাধ্যতামূলক। এই আইনের প্রতিবাদে অনেক নারী এখন নিজেদের চুল কেটে ফেলছেন এবং হিজাব পুড়িয়ে ফেলছেন।
//জ//