
ছবি সংগৃহীত
মধুচন্দ্রিমার সুযোগে স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী সোনম রঘুবংশীর বিরুদ্ধে। মেঘালয় পুলিশের বরাতে জানা গেছে, এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ছিল সম্পূর্ণ সোনমের পূর্বপরিকল্পিত, যার বাস্তবায়নে তিনি ভাড়াটে খুনিদের নিয়োগ করেছিলেন। প্রস্তাব দিয়েছিলেন ২০ লাখ রুপি।
গত ১১ মে রাজা রঘুবংশী ও সোনমের বিয়ে হয়। এরপর ২১ মে তাঁরা মধুচন্দ্রিমায় যান মেঘালয়ের সোহরায়। কিন্তু ২৩ মে থেকে তাঁদের কোনো খোঁজ মিলছিল না। অবশেষে ২ জুন এক জলপ্রপাতসংলগ্ন গিরিখাতে রাজা রঘুবংশীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ ধারণা করছে, নিখোঁজ হওয়ার দিনই, অর্থাৎ ২৩ মে রাজাকে হত্যা করা হয়। এফআইআরে বলা হয়েছে, ধারালো দা (চাপাতি) দিয়ে রাজাকে হত্যা করে তাঁর কাছে থাকা মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
ঘটনার পর সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় সোনমের কথিত প্রেমিক রাজ কুশওয়াহাকে। এর এক দিন পরই সোনম আত্মসমর্পণ করেন এবং তাঁকে উত্তর প্রদেশের গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে মেঘালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, সোনম খুনিদের প্রাথমিকভাবে রাজার ওয়ালেট থেকে ১৫ হাজার রুপি দেন এবং পরে আরও ১৫ লাখ রুপি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
মেঘালয় পুলিশের ইস্ট খাসি হিলস জেলার পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম বলেন, “এফআইআরে রাজাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা এবং লুটপাটের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। সোনমের ভূমিকা স্পষ্টভাবে একটি ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়। আমরা সব প্রমাণ বিশ্লেষণ করছি।”
পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন তিন খুনি নিজেদের পর্যটক পরিচয়ে রাজা-সোনম দম্পতির সঙ্গী হয়েছিলেন। ঘটনার দিন সোনম ক্লান্ত হওয়ার ভান করে রাজাকে নির্জন স্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং সেখানেই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়। পরে তারা মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ বিবরণ রেকর্ড করতে সোনম ও সন্দেহভাজন খুনিদের ঘটনাস্থলে নেওয়া হবে।
রাজ কুশওয়াহা দাবি করেছেন, তিনি হত্যার পরিকল্পনায় অংশ নিতে চাননি এবং শেষ মুহূর্তে মেঘালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেন। তবে সোনমের চাপের মুখে বাকি তিনজন খুনে রাজি হন বলে তিনি দাবি করেন।
পুলিশ সোনম, রাজ কুশওয়াহা এবং সন্দেহভাজনদের মোবাইল ডেটা, টিকিট এবং আর্থিক লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড যা আর্থিক লোভ এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা ঘটনার নেপথ্যে থাকা সম্পর্কের টানাপোড়েন ও হত্যার মোটিভ স্পষ্ট করতে পুলিশ আরও গভীরে তদন্ত চালাচ্ছে।
ইউ