
ফাইল ছবি
বিশ্ববাজারে আবারও কমেছে জ্বালানি তেলের দাম। চীনের দুর্বল তেলচাহিদা, ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য আলোচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও না আসায় বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে তেলের দামে।
বুধবার (১১ জুন) সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ১৫ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি ব্যারেল ৬৬ দশমিক ৭২ ডলারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম কমেছে ১০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ, দাঁড়ায় প্রতি ব্যারেল ৬৪ দশমিক ৮৮ ডলার। এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দুই দিনব্যাপী এক চূড়ান্ত আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতার কাঠামোতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ। মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, এর ফলে চীনের বিরল খনিজ ও চুম্বকজাত পণ্যের ওপর থাকা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে সবকিছু এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা মনে করেন, এই দামের পতনের পেছনে প্রযুক্তিগত মুনাফা তুলে নেওয়া এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বাজারে সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করাই মূল কারণ। আরেক বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, চীনের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কমে গেলে এবং যুক্তরাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা ফিরলে ভবিষ্যতে তেলের চাহিদা ও দাম আবারও বাড়তে পারে।
অন্যদিকে, ওপেক প্লাস জোট ঘোষণা দিয়েছে, তারা আগামী জুলাই মাসে দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়াবে। এটি তাদের উৎপাদন হ্রাস তুলে নেওয়ার ধারাবাহিক চতুর্থ ধাপ। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজারে এই অতিরিক্ত সরবরাহের জন্য সমপরিমাণ চাহিদা তৈরি হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের বিশ্লেষক হামাদ হুসেইন জানিয়েছেন, সৌদি আরবসহ জোটের অভ্যন্তরীণ চাহিদা কিছুটা ভারসাম্য আনতে পারলেও তা মৌসুমি হওয়ায় স্থায়ী সমাধান নয়। তার পূর্বাভাস, বছরের শেষ নাগাদ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬০ ডলারে নেমে আসতে পারে।
এদিকে, মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসন (ইআইএ) আগামীকাল বুধবার (১২ জুন) তাদের সাপ্তাহিক তেল মজুত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। মার্কেট সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের মজুত কমেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল। রয়টার্স পরিচালিত জরিপে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ওই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে তেল মজুত ২০ লাখ ব্যারেল কমলেও ডিজেল ও গ্যাসোলিনের মজুত সামান্য বেড়েছে।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে যাওয়া বাংলাদেশসহ আমদানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য স্বস্তির বার্তা বয়ে আনলেও দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব নির্ভর করবে বৈশ্বিক বাণিজ্য আলোচনা ও সরবরাহ পরিস্থিতির ওপর।
ইউ