
ছবি: আরসার গান কমান্ডার মুছাসহ আটক ৩...
বাংলাদেশে আশ্রিত হয়েও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের বাড়-বাড়ন্তে অতিষ্ঠ কক্সবাজার জেলার বাসিন্দারা। ২০১৭ সালের আগস্টে মায়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও অত্যাচার থেকে বাঁচতে ধাপে ধাপে সাত লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক পালিয়ে সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় এসে আশ্রয় নেয়। এই আশ্রয়গ্রহণকারীদের মধ্যে মিশে কিছু রোহিঙ্গার জঙ্গি-সন্ত্রাসীও ঢুকে পড়ে। এখনও তারা তাদের পুরোনো পেশাতেই রয়েছে। এরা শরনার্থীশিবির থেকে তরুণী-যুবতীদের ধরে নিয়ে হোটেলে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করছে। প্রতিবাদী নারীদের বিদেশে পাচার করছে।
এবার কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকা থেকে মায়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) শীর্ষ সন্ত্রাসী ও গান কমান্ডার মো. রহিমুল্লাহ মুছাকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)। এ সময় দুই বাংলাদেশিসহ তার আরো তিন সহযোগীকে আটক করা হয়।
২৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) রাতে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ অ্যান্ড মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী। তিনি জানান, গোপন খবর পেয়ে র্যাবের একটি দল ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় আরসা কমান্ডার রহিমুল্লাহসহ এক রোহিঙ্গা ও দুই বাংলাদেশি সহযোগীকে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বিস্ফোরকসহ আটক করা হয়।
এরআগে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের বাড়-বাড়ন্ত নিয়ে তোপ দেগেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা অস্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। গত মাসে রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার ছয় বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি এখন আমাদের জন্য সত্যিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘ সদর দপ্তরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনের ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মায়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচূত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। গত মাসে রোহিঙ্গাদের বাস্তুচূত হওয়ার ছয় বছর পূর্ণ হয়েছে। সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা অস্থায়ীভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু পরিস্থিতি এখন আমাদের জন্য সত্যিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক হতাশার জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সম্ভাব্য মৌলবাদকে ইন্ধন দিতে পারে। এই অবস্থা চলমান থাকলে এটি আমাদের আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মায়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং সেখানে তারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আগ্রহী। আসুন আমরা এই নিঃস্ব মানুষের জন্য তাদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করি। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দক্ষতা ও বৈধতা নিয়ে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। এর ফলে একটা শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অর্জিত সাফল্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
ইউ