
ফাইল ছবি
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, জামায়াতকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কেন আওয়ামী লীগ এতদিন নেয়নি? আজকে কেন এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারা? যদিও এ নিয়ে তাদের অনেক ধরনের যুক্তি থাকবে, তারা অনেক কথা বলবে।
বুধবার (৩১ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা খুবই পরিষ্কার। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। সে অনুযায়ী যারা রাজনীতি করে, তাদের অধিকার আছে রাজনীতি করার। এখন জনগণের দায়িত্ব হচ্ছে, সে কার রাজনীতি গ্রহণ করবে, আর কার রাজনীতি গ্রহণ করবে না।
সরকার একটার পর একটা ইস্যু তৈরি করে। সেটিকে আবার অন্য দিকে নিয়ে যায়। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করাও সেরকম একটা ইস্যু উল্লেখ করে বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, পাকিস্তান আমলে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। হাজী মোহাম্মদ দানেশসহ অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। যখন তা বাতিল হলো, দুই বছর পর তারা দেশে ফিরে এসেছিলেন। এই ধরনের কাজ করে স্বৈরাচার সরকার। যাদের সঙ্গে জনগণের সত্যিকার কোনো সম্পর্ক থাকে না। এই সরকারের সঙ্গেও জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই, কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বচিত নয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশে এত বড় সংকট। সেখানে জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সরকার নেই। প্রতিনিধিত্ব করে এমন সরকার না থাকলে তো সংকট সমাধান হবে না। সরকারের কোনও জবাবদিহিতা নেই, তাদের কোনও বৈধতা নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেক দুঃখ-কষ্টের মাঝেও আমরা আশাবাদী হই, যখন পত্রিকায় দেখলাম- দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্য, তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসছেন। শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিকরা নেমে আসছেন, তাদের বক্তব্য রাখছেন। হত্যার তদন্ত চেয়ে আজকে শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি বিবৃতিতে দিয়েছেন। আবার দুঃখ হয়, যখন দেখি, কিছু মানুষ নির্লজ্জভাবে ভয়াবহ দানবের পক্ষ নিয়ে কথা বলছে, ছাত্রদের ওপর অত্যাচার, গুলি চালিয়ে তাদের হত্যাকে সমর্থন করছে। আমরাসহ পুরো জাতি এদের চিনে রাখছে।
কোটা আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের পরিবার ভালো নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বিবৃতিতে বলেন, কারণ চোখের সামনে তাদের ভবিষ্যৎ চলে গেছে। তাদের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটি চলে গেছে। তাদের ৪-৬ বছরের বাচ্চাটা চলে গেছে। রাষ্ট্র কী জবাব দেবে, এসব হত্যার? দায় তো রাষ্ট্রের। আমরা বলছি, এসব হত্যার দায় তাদের নিতে হবে। দায় স্বীকার করে ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হবে। রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবে শেষ করতে হবে। তাদের নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
কোটা আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ বিচার বিভাগীয় কমিশন ও তদন্ত আমরা বিশ্বাস করি না। এরা নিরপেক্ষ না।
ছাত্রদের সমস্ত আন্দোলনে আমাদের সমর্থন রয়েছে। চলমান এ সান্ধ্য আইনের (কারফিউ) বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এ মুহূর্তে সান্ধ্য আইন পুরোপুরিভাবে তুলে দিয়ে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
ইউ