ঢাকা, বাংলাদেশ

সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

English

মতামত

শুভ জন্মদিন প্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ 

বায়াজিদ গালিব

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

শুভ জন্মদিন প্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ 

বায়াজিদ গালিব

বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের আজ জন্মদিন।  আমি যখন নটর  ডেম কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র  তখন বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার সমসাময়িক লেখকের বই পড়া শুরু করেছি।  সেই সময়  প্রথম পরিচিত হই হুমায়ুনআহমেদের তিনটি বইয়ের সাথে।  "নন্দিত নরকে" ও "শঙ্খনীল কারাগার" এবং বিজ্ঞান কল্প কাহিনী "তোমাদের জন্যভালোবাসা"। অসাধারণ লেগেছিলো তাঁর বই তিনটি।  এই তিনটি উপন্যাস ও গল্প  আমার অন্তরে স্থান করে নিয়েছিল।এরপর  অনেকদিন তাঁর কোনো গল্প উপন্যাস পড়া হয়নি।  বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভবত তৃতীয়  বর্ষে  আবার শুরু করি তাঁরগল্প-উপন্যাস।  তাঁর  অনেক গল্প-উপন্যাস পড়েছি কিন্তু প্রথম যে তিনটি বই আমার মনে গভীর দাগ কেটেছিলো পরবর্তী লেখায়তেমন প্রভাবান্বিত হই  নাই।  তবে তাঁর  সৃষ্ট অসাধারণ চরিত্র  হিমু এবং মিছির  আলী আমার খুব ভালো লাগে।  হুমায়ুনআহমেদ আবারো আমার  প্রিয় হয়ে উঠলেন ছোট পর্দায় তাঁর লেখা ও পরিচালনায় নাটকের মাধ্যমে।  তাঁর  নাটকের সংলাপএক নতুন দিগন্তের উন্মোচিত হয়েছিল। আর সে কারণেই বোধহয় বাংলা কথা সাহিত্যে তিনি সংলাপ প্রধান নতুন শৈলীরজনক। 

আমরা যখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম একই বছরে রসায়ণ বিভাগের অনেক শিক্ষক চলে গিয়েছিলেন বিশ্বেরবিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পি এইচ ডি করতে। রসায়ন বিভাগ শিক্ষক শূন্য হলে,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আসতেনআমাদের ক্লাস নিতে।  তখন আমার মনে আশা জেগেছিলো হুমায়ুন আহমেদ স্যারও হয়তো আসবেন। কিন্তু আমার আশাপূরণ হয় নি।  ছাত্র জীবনে  তাঁকে  কাছ থেকে দেখার ইচ্ছে থাকলেও কোনোদিন দেখা করার সুযোগ হয় নি। দেখা করার বিশেষকারণ কোয়ান্টাম  মেকানিক্স।  তিনি তাঁর  এক গল্পে লিখেছেন পি এইচ ডি  করার সময় তিনি কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়েছিলেনএবং প্রথম পরীক্ষায় শূন্য পেয়েছিলেন।  পরবর্তীতে তিনি ১০০% নম্বর পেয়েছিলেন। এটা  কি ভাবে সম্ভব!   আমি তখন রসায়নশাস্ত্রে পড়ছিলাম এবং  আমার একটি কোর্স কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলাম।  কোয়ান্টাম মেকানিক্স অত্যন্তকঠিন এবং জটিল একটি সাবজেক্ট। অতি পারমাণবিক কণা অথবা তরঙ্গের মাপনীতে পদার্থের আচরণ বর্ণনা করে, কোয়ান্টামমেকানিক্সের এই সংজ্ঞায় আমার কোনো সংশয় ছিল না।  কিন্তু এই মাপন পদ্ধতির জটিল সমীকরণ নিয়েই খাবি খাচ্ছিলাম।তাই আমার জানতে  ইচ্ছে হচ্ছিলো তাঁর  ১০০% নম্বর পাওয়া কি নিছক গল্প  না কি বাস্তব?   সীমিত জ্ঞান দ্বারা অসীম জ্ঞানেরএকজন মেধাবীকে যাচাই করাও ধৃষ্টতা। তারপরও  ইচ্ছে বলে কথা।  অবশেষে  আমার বিয়ের পর প্রথম তাঁর  দেখা পেয়েছিলাম   একুশের বই মেলায়।  তিনি ভক্তদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। ভাবলাম এইতো সুযোগ  আমি এবং আমার স্ত্রী লাইনে দাঁড়ালাম।সেই সময়ে শাওনকে নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বেশ লেখালেখি চলছে।  আমি এবং আমার স্ত্রী দুইটি বই  তাঁর  সামনে রেখেজিজ্ঞেস করলাম, স্যার ব্যাপারটা কি সত্যি? তিনি চমকে উঠে আমার দিকে তাকালেন, বললেন কোন ব্যাপার ? আমি বললাম, আপনি কোয়ান্টাম মেকানিক্সে ১০০% নম্বর পেয়েছিলেন।  তিনি আশ্বস্ত হলেন, হয়তো ভেবেছিলেন আমি শাওন সম্পর্কিত প্রশ্নকরবো।  তিনি আমাকে বললেন, তুমি ফিজিক্স না কি কেমিস্ট্রির ছাত্র ছিলে ? আমি বললাম, আমি রসায়ন শাস্ত্রে মাস্টার্সকরেছি। তিনি আমাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কত পেয়েছো ? এবার আমি বিব্রত।  তিনি বললেন, আমি একজন শিক্ষক আমাকেবললে ক্ষতি কি? আমি আমার নম্বর  বললাম, তিনি বললেন বাহ্! বেশ ভালো নম্বর পেয়েছো তো ? আমি বিস্মিত হয়েছিলামমাত্র। তারপর তার বইতে লিখলেন, শিল্পী ও গালিবকে আমার শুভেচ্ছা।  সেদিনই তাঁর  সাথে প্রথম ও শেষ দেখা। আজও  আমি এবং আমার স্ত্রী সে কথা মাঝে মাঝে আলোচনা করি। 

তাঁর  মৃত্যুর পর বিখ্যাত লেখক সমরেশ মজুমদার হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে সুন্দর একটি লেখা লিখেছিলেন আনন্দ বাজারপত্রিকায়।  সেখানে হুমায়ুন আহমেদের অনেক  প্রশংসা করেছিলেন। হুমায়ুন আহমদ ছিলেন সাহিত্যিক, গান বা কবিতা তিনিতেমন একটা লিখেন নাই।  তবে যে কয়টি গান তিনি রচনা করেছেন তা পাঠক-শ্রোতার মন কেড়েছে এ কথা সত্যি। তিনি ছিলেনসাহসী লেখক, তিনি যা বিশ্বাস করতেন তাই নিয়ে লিখতেন।  তিনি তাঁর  নাটকের চরিত্র নির্দোষ বাকেরের ফাঁসির সিদ্ধান্তে লক্ষলোকের মিছিল বের করার মত ক্ষমতাধর নাট্যকার, তেমনি দেশের দুঃসময়ে "তুই রাজাকার" কথাটি প্রথম উচ্চারণকরিয়েছিলেন টিয়া পাখির মাধ্যমে। এমন লেখকের অকাল প্রয়াণ বাংলা সাহিত্যরে জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।  হুমায়ুন আহমেদ  বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথা সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ওজনপ্রিয় লেখক বলে গণ্য করা হয়। তাঁর  অকাল প্রয়াণ হয়েছে।  তাঁর  কাছে বাংলার মানুষের আরো অনেক প্রত্যাশা ছিল।  কিন্তুসে প্রত্যাশা তিনি পূরণ করতে পারেন নি কারণ  মরন ব্যাধি ক্যান্সার তাঁর  জীবন কেড়ে নিয়েছে , কিন্তু জনপ্রিয়তা কেড়ে নিতেপারে নি।  বাংলার অগণিত পাঠকের মধ্যমনি হয়ে রইবেন তিনি চিরকাল। শুভ হোক আপনার জন্মদিন।  প্রিয় লেখক আপনি  যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন। আমরা আপনার আত্মার শান্তি  কামনা করি।  আপনি স্বর্গবাসী  হন সেই প্রার্থনা  করি  পরমকরুনাময়ের কাছে।  

....ও কারিগর, দয়ার সাগর, ওগো দয়াময়

চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়।

 

বায়াজিদ গালিব,ক্যালগেরী, ক্যানাডা থেকে:

//এল//

প্রতিপক্ষের জালে সাবিনা-মারিয়াদের ১৯ গোল!

‘অস্ত্র নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ হোক মানুষের কল্যাণে’

কক্সবাজারে বাস-মাইক্রোর সংঘর্ষে নিহত ৪

বৃষ্টি ও গরম নিয়ে আবহাওয়ার সবশের্ষ বিজ্ঞপ্তিতে যা জানা গেল

মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ৯০০

নেত্রকোণা  ৪০০ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ আটক ৩

৪০০ কেজির মিষ্টি কুমড়ায় নৌকা বানিয়ে ভাসালেন নদীতে

ফের ৪০ ডিগ্রি ছাড়াল ঢাকার তাপমাত্রা

সোনারগাঁওয়ে বৈশাখীমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমাপ্তি

নারী ক্রিকেটের প্রচারণায় তিন স্কুলে জ্যোতি-মারুফারা

গাজীপুরে এএসআইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

বঙ্গবন্ধুর হত্যা ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ চিহ্নিত করতে কমিটি

নোয়াখালীতে পুকুরে ডুবে ২ ভাইয়ের প্রাণহানি

নাটোরে আরো ২০ নারীকে সেলাই মেশিন বিতরণ করলো বসুন্ধরা গ্রুপ

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়