মিলি সুলতানা: ‘চেহারায় তার ধারালো আকর্ষণ। চোখের দৃষ্টিতে ম্যাজিক টাচ। তার চোখের দিকে সরাসরি তাকালে সাধারণ মানুষের প্যানিক অ্যাটাক হত। বিশেষ করে মেয়েদের। অপ্রাপ্ত বয়স থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের রেপ করতো। রেপের পর ঘটাতো বীভৎস কাণ্ড। রেপ ভিকটিমকে গুলি করে অথবা ছুরির আঘাতে হত্যা করতো। হত্যা করে সে ক্ষান্ত হতনা। মৃত নারীর গোপনাঙ্গে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নারকীয় উল্লাসে মেতে উঠতো। ভিকটিমের বাসার ফ্রিজ খুলে খাওয়া দাওয়া করতো। তার আরও বিকৃত আরেকটা আচরণ ছিল-- রেপ করার পর সে ভিকটিমের বাসার লিভিং রুমের কার্পেটে হস্তমৈথুন করতো। তার নৃশংসতার শিকার হয়েছে ১৫ জন নারী। মহিলাদের পিছু নিতো। তার নাম রিচার্ড রামিরেজ। আমেরিকান দুর্ধর্ষ সিরিয়াল কিলার, প্যাডোফাইল, কিডন্যাপার এবং রেপিস্ট। রামিরেজ চাইতো মহিলারা তাকে ভয় পাক। কোনো সাহসী মহিলা হলে সে তাকে হত্যা করার সময় নৃশংসতার আশ্রয় নিতো। গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দিত।চেহারার নকশা পাল্টে দিত। কারো কারো মাথা কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিত। ৭ বছরের বালিকা থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধাকে শিকার বানিয়েছে রামিরেজ। সে লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাস করত।’
‘রিচার্ড রামিরেজকে নিয়ে নেটফ্লিক্সে "Night Stalker" নামে একটা ডকুমেন্টারি ফিল্ম নির্মিত হয়েছে। সেখানে লস অ্যাঞ্জেলসের পুলিশ কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতার কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে, তাদেরই ভাষ্যে। এসব পুলিশ অফিসাররা সবাই এখন অবসরপ্রাপ্ত। তারা বলেছেন, সিরিয়াল কিলার রামিরেজ কিভাবে পুলিশ প্রশাসনের নাকের আগায় দম আটকিয়ে রেখেছিল। দেখতে অত্যন্ত সুদর্শন ছিল সে। একদম হলিউডের নায়কদের মত মনে হত। ছয় ফিট ছিল তার উচ্চতা। জুতার সাইজ ছিল এগারো। তার শরীরে ভীষণ দুর্গন্ধ ছিল। পাঁঠার গায়ের গন্ধের মত। দাঁত ছিল বিশ্রী, দাঁতে ক্যাভিটিজ ছিল -- বলেছেন সাবেক এক পুলিশ অফিসার। রামিরেজ নিজেকে স্যাটানিস্ট (Satanist) বলে দাবি করতো। তার হাতের তালুতে পেন্টাগ্রাম (Pentagram) আঁকা ছিল। এতে সে বোঝাতো, সে শয়তানকে সন্তুষ্ট করছে। শয়তানই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মালিক। গড (God) বলে কিছু নেই। মানুষ অযথা গড বিলিভ করে। আদালতে দাঁড়িয়েও সে বলেছে, God is a damn liar......তার অ্যাটিটুড দেখে জজ বিস্মিত হয়েছেন। জজের প্রশ্নের জবাবে রামিরেজ বলেছে, নিজের অপরাধের জন্য সে এতটুকু অনুতপ্ত নয়। সে যা করেছে সেগুলো অপরাধ নয়। এটা তার দায়িত্ব ছিল।’
‘তাকে যখন কোর্টে হাজির করা হয়, সেখানেও ঘাড় ঘুরিয়ে নারীদের খুঁজেছে। তাদের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপেছে। এই প্রসঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউটর বলেছেন, সিরিয়াল কিলার রামিরেজের মত সেক্স অ্যাপিল সম্পন্ন ব্যক্তি তিনি তার পেশাগত জীবনে দেখেননি। তার মধ্যে Animalistic Magnetism আছে। ২০১৩ সালের জুন মাসে কারাগারে মৃত্যু হয় তার। সে বি - সেল লিম্ফোমায় ভুগছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সবচাইতে ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার ছিল স্যামুয়েল লিটল। ৯৩ জনকে খুন করেছে স্যামুয়েল। খুন করার পর সে রঙ তুলি দিয়ে মৃতদের ছবি আঁকতো।’’