শওগাত আলী সাগর: পৃথিবীর সব দেশেরই করোনার টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা নেই। সব কোম্পানিরও নাই। যে কারণে অক্সফোর্ডকে এস্ট্রেজেনেকার সঙ্গে হাত মিলাতে হয়েছে, ছুটে যেতে হয়েছে সেরামের কাছে। ফাইজারের মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানি পার্টনারশিপ করেছে বায়োএনটেক এর সঙ্গে। এখন যে সব দেশের কোম্পানি টিকা উৎপাদন করছে, সেই দেশগুলো যদি করোনার টিকা নিজ দেশের জন্য আটকে দেয়- ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়। আমেরিকা সেই কাজটিই করতে যাচ্ছে।
জো বাইডেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের জন্য আয়োজিত ব্রিফিং এ স্পষ্ট করেই ঘোষণা দেয়া হয়েছে- আমেরিকার প্রতিটি নাগরিক টিকা না পাওয়া পর্যন্ত আমেরিকায় উৎপাদিত কোনো কোম্পানির কোনো টিকা অন্য কোনো দেশে যাবে না। প্রতিবেশী কানাডা বা পৃথিবীর কোনো দেশের সঙ্গেই টিকা শেয়ার আগ্রহ তাদের এই মুহূর্তে নেই।
ফাইজার আর মডার্নার টিকা উৎপাদিত হচ্ছে আমেরিকায় অবস্থিত কারখানায়। তার মানে হচ্ছে আমেরিকা থেকে এই দুই কোম্পানির টিকা পৃথিবীর আর কোনো দেশেই যাবে না। ফাইজারের টিকার উৎপাদন অবশ্য বেলজিয়ামেও হচ্ছে। সেখানেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের নীতিমালা নিয়েছে। যে কারণে সেখান থেকেও টিকা অন্য দেশে যেতে পারবে না। ফাইজার, আর মডার্নার টিকা কী কেবল আমেরিকা আর ইউরোপীয়রাই পাবে! পৃথিবীর আর মানুষের কাছে যাবে না!
টিকা নিয়ন্ত্রণের এই কাজটা অবশ্য শুরু করেছিলো ভারত। নিজেদের চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত টিকা রপ্তানি করা যাবেনা- এমন শর্তেই সেরামকে অক্সফোর্ডের টিকা ব্যবহারের অনুমতি দিযেছিলো ভারত সরকার। পরে অবশ্য তারা সেই অবস্থান থেকে সরে দাড়ায়। কিন্তু মহামারীর প্রতিষেধেকের উপর নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দিতে এগিয়ে আসে আমেরিকা এবং ইউরোপ।
চলতি সপ্তাহে হোয়াইট হা্উজে বাইডেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের টিকার আপডেট সম্পর্কে ব্রিফিং অনুষ্ঠানে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, নিজ দেশের সবাই টিকা পাবার আগে আমেরিকায় উৎপাদিত কোনো টিকাই কানাডা বা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করার কোনো আগ্রহ তাদের নাই।